দেউচা পাচামি ইস্যুতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মানবিক হতে চেয়েছিলেন। তাই জন্য সেখানকার আদিবাসী বাসিন্দাদের জন্য প্যাকেজ ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই প্যাকেজ সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছাল না। তার আগেই গো-ব্যাক স্লোগান শুনে জেলা প্রশাসনকে মাঝ রাস্তা থেকে ফিরে যেতে হল।
অভিযোগ, তির-ধনুক নিয়ে আদিবাসীরা তাঁদের তাড়া করেন। বেশ কয়েক জায়গায় অবরোধও করেন তাঁরা। কোনও মতে পালিয়ে বাঁচেন জেলা প্রশাসনের আধিকারিক ও তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা।
দেউচা পাঁচামি প্রস্তাবিত কয়লা প্রকল্পের জন্য আদিবাসীদের সঙ্গে কয়েক দফায় বৈঠক হয়েছে জেলা প্রশাসন, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে। কিন্তু তাতেও জট কাটেনি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্যাকেজ অনুযায়ী, আদিবাসীদের বিঘা প্রতি ১৩ লক্ষ টাকা, চাকরি ও পাট্টা দেওয়া হবে। সেই মতো সোমবার দুপুরে ইচ্ছুক আদিবাসী পরিবারের হাতে তা তুলে দেওয়ার জন্য নির্দিষ্ট সময়ে সেখানে যাওয়ার চেষ্টা করেন জেলাশাসক ও অন্য আধিকারিকরা।
কিন্তু মাঝপথে আদিবাসীরা তাঁদের বাধা দেন। গো-ব্যাক শ্লোগান শুনতে হয় তাঁদের। হাতে লাঠি নিয়ে আদিবাসীদের রুদ্রমূর্তি দেখে সরকারি আধিকারিক, এলাকায় আসা তৃণমূল কংগ্রেস সমর্থকরা ভয়ে পালিয়ে যান। তাঁদের এক প্রকার গ্রামের বাইরে বের করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।
এলাকাবাসীদের দাবি, তাঁরা প্যাকেজ চান না। লিখিত প্রতিশ্রুতি চান। সরকারকে লিখিত দিতে হবে যে, এখানে কোনও কয়লা খনি হবে না। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ - অনুষ্ঠানে বাসে করে বহিরাগতদের নিয়ে তৃণমূল গ্রামে ঢোকার চেষ্টা করে। এক আন্দোলনকারী বলেন - 'আমরা গ্রামে বহিরাগতদের ঢুকতে দেব না। আমরা কয়লা খনি চাই না। আর কোনও প্যাকেজও আমাদের লাগবে না।’
শুধু তাই নয়, প্রশাসনিক আধিকারিক, তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকদের বাস যাতে গ্রামে ঢুকতে না পারে, তারজন্য এদিন বিভিন্ন জায়গায় অবরোধ করেন আদিবাসীরা। কয়লাখনি এলাকায় ঢোকার আগেই মথুরা পাহাড়ি, দেওয়ানগঞ্জ সহ বিভিন্ন এলাকায় হাতে তির-ধনুক নিয়ে রাস্তা অবরোধ চলে। এরপরই সেখানে সরকারি অনুষ্ঠান কার্যত বাতিল হয়ে যায়।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন