দেউচা-পাচামিতে তৃণমূলের মিছিল নিয়ে তীব্র উত্তেজনা ছড়াল। লাঠিসোটা নিয়ে মিছিলে শামিল হলেন মহিলারাও। আদিবাসীদের দাবি সুস্পষ্ট, তারা কোন কয়লা খনি হতে দেবে না। সিঙ্গুরের মতো জমি অধিগ্রহণ করে দেওচা-পাচামি প্রকল্প হবে না। একথা মুখ্যমন্ত্রীর আগেই জানিয়েছিলেন। তার পরে সেখানে প্রশাসন কাজ শুরু করে। পাচামির আদিবাসীদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু আদিবাসীদের বড় অংশ জমি ছাড়তে চান না।
বৃহস্পতিবার তৃণমূলের পক্ষ থেকে প্রচার শুরু হলে এলাকার আদিবাসী মহিলারা তাদের দিকে তেড়ে যান। এই ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়ায়। মিছিলে ছিলেন সদ্য তৃণমূলে যোগদান করা আদিবাসী নেতা সুনীল সোরেন- সহ স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। পোস্টার, ফেস্টুন ছিঁড়ে দিয়ে স্পষ্ট দাবি জানানো হয়, ওই এলাকায় কোনও কয়লাখনি করা চলবে না।
ভিটে ও জমি ছাড়তে নারাজ মহিলাদের কথায়, আমরা কিচ্ছু চাই না। কীসের দেউচা পাচামি? কীসের মিছিল? যেমন আছি তেমন থাকব। এখানেই থাকব। অন্যদিকে এই ঘটনার জন্য সুনীল সরেন সেভ ডেমোক্রেসি সংগঠনকে দায়ী করে অভিযোগ তুলেছেন যে, তারাই আদিবাসীদের উস্কে দিয়েছে। তিনি বলেন, মানুষ যাতে বহিরাগতদের প্রচারের পা না দেন, তার জন্যই এই মিছিলের আয়োজন করা হয়।
এদিকে, এই ঘটনা নিয়ে সুর চড়িয়ে বাম নেতা বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য নিজের ফেসবুকে পোস্ট করেছেন, 'দেউচাপাচামিতে শুরু হল পুলিশি জুলুম। তৃণমূলের মিছিল সেভ ডেমোক্রেসির বিরুদ্ধে। আদিবাসী মানুষের পক্ষে নয়। আদিবাসী মানুষের জীবন জীবিকার নিশ্চয়তার পক্ষে দেওয়ানগঞ্জে সেভ ডেমোক্রেসির সভা ছিল শান্তিপূর্ণ। কোন পুলিশি উপস্থিতির প্রয়োজন পরেনি। আজ তৃণমূলের মিছিল ছিল সশস্ত্র পুলিশ পরিবেষ্টিত। সেই পুলিশি সজ্জিত মিছিল শেষ পর্যন্ত মহিলাদের উপর আক্রমণ দিয়ে শেষ হল ... মহিলা মুখ্যমন্ত্রী পুলিশ দিয়ে আদিবাসী মহিলাদের আক্রমণ করলে সেভ ডেমোক্রেসি কেন, যে কোন মানবিক বোধ সম্পন্ন মানুষ প্রতিবাদ করতে বাধ্য। চলবে প্রতিরোধ।'
অন্যদিকে, পাচামির এই বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল বলেন, 'সাত- আটজন মহিলাকে মদ খাইয়ে এসব শিখিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে মিছিল সাকসেসফুল হয়েছে।' স্বাভাবিক ভাবেই অনুব্রতর এমন মন্তব্যে শুরু হয়েছে বিতর্ক।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন