তৃণমূলের প্রাক্তন বিধায়ক দলে কেন? আপাতত এই বিক্ষোভে ফুটছে রাজ্য বিজেপির একটা বড়ো অংশ। ধুপগুড়ি বিধানসভা উপনির্বাচনের মাত্র ৪৮ ঘণ্টা আগে প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক মিতালী রায় বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। যে যোগদান নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলেছেন রাজ্য বিজেপির একাংশ।
রাজ্যের গেরুয়া শিবিরের এক অংশের নেতৃত্বের বক্তব্য, যেভাবে নির্বাচনের মুখে প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ককে বিজেপিতে নেওয়া হয়েছে তা অত্যন্ত নিন্দনীয়। এর থেকেই প্রমাণ হচ্ছে, যে ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনের ফল থেকে দল কোনও শিক্ষা নেয়নি। সেবারও এভাবেই তৃণমূল থেকে বহু নেতা এভাবে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিল শুধুমাত্র নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে। মূলত এই কারণেই বিজেপি সেবার জয়ী হতে পারেনি।
এই বিষয়ে কোচবিহারের বিজেপি জেলা সম্পাদক অজয় সাহা এক সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে বিজেপিতে মিতালী রায়ের অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে তাঁর আপত্তি জানিয়েছেন।
ওই পোষ্টে তিনি লেখেন, “বিজেপি ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচন থেকে কোনো শিক্ষা নিয়েছে বলে মনে হয় না। নির্বাচনের আগে তৃণমূল কংগ্রেসের অনেক নেতা ও বিধায়ক বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। তাদের মধ্যে অনেকেই ২০২১ সালের নির্বাচনে বিজেপির হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। কিন্তু তারপরও আমরা রাজ্যে সরকার গঠন করতে পারিনি। ফলাফলের পর ওইসব নেতারা ফের তৃণমূল কংগ্রেসে চলে যান।”
তাঁর প্রশ্ন, "তৃণমূল কংগ্রেসে উপেক্ষিত হওয়ার পরেই মিতালী রায় বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। তিনি নিজেই ২০২১ সালে বিজেপি প্রার্থীর কাছে পরাজিত হয়েছিলেন। তাঁকে দলে নিয়ে বিজেপি কীভাবে লাভবান হতে পারে?"
সাহা আরও বলেন, দলে দলবদলুদের নেওয়ার এই প্রবণতার কারণে অনেক পুরানো নিষ্ঠাবান কর্মীরা হয় দল ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন বা নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ছেন।
তিনি আরও বলেন, “তৃণমূল কংগ্রেসের দুর্নীতিবাজ নেতাদের এইভেবে বিজেপিতে অন্তর্ভুক্ত করায় তাঁরা হতাশ। রাজ্য নেতৃত্ব কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে গুরুত্ব পাওয়ার জন্য একটি শর্টকাট পদ্ধতি অবলম্বন করছে যা রাজ্যে বিজেপিকে ধ্বংস করছে।”
মিতালী রায়, ২০১৬ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ধূপগুড়ির তৃণমূল বিধায়ক ছিলেন। ওই কেন্দ্র থেকেই ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে শাসক দলের হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিজেপি প্রার্থীর কাছে পরাজিত হন।
সম্প্রতি বিজেপি বিধায়ক বিষ্ণু পদ রায়ের মৃত্যুর পর ধুপগুড়ি আসন খালি হয় এবং যে কারণে ওই আসনে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে আগামী ৫ সেপ্টেম্বর।
তৃণমূলের দলীয় সূত্র অনুসারে, এই উপনির্বাচনেও মিতালী রায় তৃণমূলের প্রার্থী হবার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। যদিও তৃণমূলের পক্ষ থেকে এবার প্রার্থী বদল করে ওই আসনে অধ্যাপক নির্মল চন্দ্র রায়কে মনোনয়ন দেওয়া হয়। যে ঘটনায় দলের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করেন মিতালী রায় এবং দলত্যাগ করে বিজেপিতে যোগ দেন।
- with inputs from Agency
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন