টেট উত্তীর্ণ হয়েও মেলেনি শিক্ষকের চাকরি। অবশেষে আত্মহত্যার পথ বেছে নিলেন চাকরিপ্রার্থী রাজু গাজি। শুক্রবার রাতে উত্তর চব্বিশ পরগণার ঠাকুরনগর স্টেশনের কাছে রেললাইন থেকে উদ্ধার করা হয় তাঁর ক্ষত-বিক্ষত দেহ। চাকরি না পাওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন তিনি।
রাজুর বাড়ি উত্তর চব্বিশ পরগণার বাদুরিয়া থানার অন্তর্গত দক্ষিণ চাপড়া এলাকায়। ২০১৭ সালের প্রাথমিক টেট আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্ব ছিলেন তিনি। রেল পুলিশের দাবি, ট্রেনে কাটা পড়েই মৃত্যু হয়েছে তাঁর। এমনকি রাজুর পরিবার ও তাঁর আইনজীবী সুদীপ্ত দাশগুপ্ত দাবি করেছেন, মামলা চলাকালীনই আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন রাজু।
রেল পুলিশ সূত্র মোতাবেক জানা গেছে, বনগাঁ শাখার চাঁদপাড়া ও ঠাকুরনগর স্টেশনের মাঝামাঝি এলাকা থেকে উদ্ধার রয়েছে রাজুর দেহ। শুক্রবার সন্ধ্যায় রেলে কাটা পড়ে মৃত্যু হয়েছে তাঁর। বনগাঁ স্টেশনের জিআরপি রাজুর দেহ উদ্ধার করে। তারপর তাঁর মৃতদেহ ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হয় বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে।
এ প্রসঙ্গে রাজুর বাবা ইসমাইল কাজি জানান, বনগাঁয় যাবেন বলে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন রাজু। রাতের দিকে তাঁকে ফোন করলে রিং হলেও সে ফোন ধরেনি। সেই ফোন ধরে বনগাঁ জিআরপি থানার পুলিশ। ফোনে তাঁরা ইসমাইলকে থানায় যেতে বলেন। থানায় গিয়ে ইসমাইল জানতে পারেন, রাজু আর নেই।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের ৯ অক্টোবর প্রাথমিক টেটের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হলে, রাজু ও তাঁর সাথীরা টেট পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়ে আন্দোলন শুরু করে। অবশেষে ২০২১ সালের ৩১ জানুয়ারী পরীক্ষা হয় এবং পরবর্তী সময়ে আন্দোলন করে চলতি বছরের ১০ জানুয়ারী টেট পরীক্ষার ফলপ্রকাশ হয়। সেই পরীক্ষায় পাস করে ৯৮৯৬ জন প্রার্থী।
কিন্তু প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ রাজুকে অকৃতকার্য ঘোষণা করে। OBC A ক্যাটাগরিতে ৮২.৫ ( ৫৫ শতাংশ নম্বরে) নম্বর পেলে টেট উত্তীর্ণ হয়। RTI মারফত রাজু জানতে পারে, তাঁর টেট স্কোর ৮২। অর্থাৎ C TET নিয়ম অনুযায়ী সে উত্তীর্ণ হয়েছে। কিন্তু রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ ৮২ নম্বরে তাঁকে চাকরি দেয়নি। সেই বিষয়ে হাইকোর্টের আইনজীবীরা মামলা দায়ের করেছে এবং বিষয়টি এখনও বিচারাধীন রয়েছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন