নিম্নচাপের জেরে গত শনিবার থেকে লাগাতার বৃষ্টি হয়েছে দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে। মঙ্গলবার সকাল থেকে আবহাওয়ার উন্নতি হলেও, লাগাতার বৃষ্টির জেরে জলমগ্ন পরিস্থিতি দক্ষিণবঙ্গের বহু জেলায়। তার উপর ঝাড়খণ্ডের বৃষ্টির প্রভাবও পড়তে চলছে রাজ্যে। মঙ্গলবার সকাল থেকে ১ লাখ ৪৯ হাজার কিউসেক জল ছাড়া শুরু করল ডিভিসি। যার জেরে দক্ষিণবঙ্গের প্লাবন-পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে বলে আশঙ্কা।
নিম্নচাপের জেরে লাগাতার বৃষ্টির ফলে জলের চাপ বেড়েছে ডিভিসির দুই জলাধার – মাইথন এবং পাঞ্চেতে। এই দুই জলাধার থেকেই জল ছাড়া শুরু হয়েছে। সোমবার সন্ধ্যায় দু’টি জলাধার মিলিয়ে জল ছাড়া হয়েছিল ৮০ হাজার কিউসেক। যার মধ্যে মাইথন থেকে জল ছাড়া হয় ২৫ হাজার কিউসেক এবং পাঞ্চেত থেকে ৫৫ হাজার কিউসেক।
মঙ্গলবার সকালে সেই জল ছাড়ার পরিমাণ বাড়িয়ে প্রায় দেড় লাখ কিউসেক করা হয়েছে। এর মধ্যে মাইথন থেকে প্রায় ১ লাখ কিউসেক এবং পাঞ্চেত থেকে প্রায় ৪৯ লাখ কিউসেক জল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ডিভিসির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নিম্নচাপের কারণে শনিবার থেকে আসানসোল, দুর্গাপুরের পাশাপাশি ঝাড়খণ্ডের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে লাগাতার বৃষ্টি হচ্ছে। যার কারণে জল ছাড়তে বাধ্য হয়েছে।
মাইথন এবং পাঞ্চেত জলাধার থেকে জল ছাড়লে তা দামোদর নদ হয়ে পৌঁছয় পশ্চিম বর্ধমানের দামোদর ব্যারেজে। জলের চাপ বাড়লে দামোদর ব্যারেজ থেকেও জল ছাড়ার আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে। দামোদর ব্যারেজ থেকে জল ছাড়া হলে দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জায়গা প্লাবিত হবে। বিশেষ করে বর্ধমান, হাওড়া, হুগলির খানাকুল, আরামবাগ-সহ দামোদরের তীরবর্তী অঞ্চল জলমগ্ন হয়ে পড়বে।
অন্যদিকে, এই পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবারই তিনি মন্ত্রী ও দলীয় নেতাদের নির্দেশ দিয়েছেন প্লাবিত এলাকাগুলি পরিদর্শনের জন্য। ওইদিন রাতেই কালীঘাটে নিজের বাড়ির সামনে সাংবাদিক বৈঠক করে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, হঠাৎ করে জল ছেড়ে দিয়েছে ডিভিসি। পরিস্থিতি নিয়ে ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনের সঙ্গেও তিন বার কথা বলেছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, ইতিমধ্যেই যে পরিমাণ জল ছাড়া হয়েছে তার জেরে বীরভূম, পূর্ব বর্ধমান, বাঁকুড়া, হাওড়া, হুগলি-সহ দক্ষিণবঙ্গের বেশ কিছু জায়গা প্রভাবিত হয়েছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন