দাবি আদায়ের পাশাপাশি সিপিআই(এম)-র যুব সংগঠন ডিওয়াইএফআই (DYFI) পরিবেশ রক্ষার লড়াইকেও লক্ষ্যমাত্রা করে কর্মসূচির পরিকল্পনা করছে। এই প্রথমবার কোনও রাজনৈতিক দলের গণসংগঠন এই ধরনের কর্মসূচিতে পা রাখতে চলেছে। সংগঠনের সর্বভারতীয় সম্মেলন হবে বিধাননগরের ইজেডসিসি প্রেক্ষাগৃহে।
তার আগে কর্মসূচির প্রথম ধাপ হিসেবে প্রায় ১০০০টি সুন্দরী, গরানের ম্যানগ্রোভ উদ্ভিদ রোপণ করা হয়। সংগঠনের রাজ্য কমিটির সদস্যরা সুন্দরবনের হেমনগর ব্লকের রায়মঙ্গল নদীর বাঁধ লাগোয়া এলাকায় গাছ লাগান। কর্মসূচিতে ছিলেন ডিওয়াইএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষী মুখোপ্যাধ্যায়, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হিমগ্নরাজ ভট্টাচার্য ও কলতান দাশগুপ্ত।
অভিযোগ, গত বেশ কয়েক বছর ধরে একের পর এক বাঁধ কেটে সুন্দরবনের বিভিন্ন এলাকায় মাছের ভেড়ি হচ্ছে। নির্বিচারে ধ্বংস করা হচ্ছে ম্যানগ্রোভ। প্রকৃতির বিন্যাসকে নষ্ট করে ফুলে ফেঁপে উঠছে এলাকার কিছু প্রভাবশালী। তার জেরে সাধারণ মানুষের জীবন ক্রমশ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে। সুন্দরবনের প্রাকৃতিক পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ম্যানগ্রোভ অরণ্য।
অথচ সেই অরণ্য আজ সংকটের মুখে। নির্বিচারে ম্যানগ্রোভ অরণ্য ধ্বংসের প্রভাব শুধু সুন্দরবনবাসীর ওপরে নয়, পরোক্ষভাবে ফল পড়বে গোটা রাজ্যের মানুষের ওপর। গত কয়েক বছরে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে পড়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকা। তার ভালোরকম প্রভাব পড়ছে দক্ষিণবঙ্গের বেশ কিছু জেলায়, এমনকী কলকাতাতেও। তছনছ হয়ে যাচ্ছে বাড়ি ঘর থেকে লোকালয়, দোকানপাট। এই ঝড়ের ধাক্কা সামাল দেয় সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ প্রাচীর। কিন্তু কিছু মানুষের মুনাফা অর্জনের লোভ বাকিদের জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলছে।
ডিওয়াইএফআই-এর দাবি, রাজ্য সরকার বা কেন্দ্রীয় সরকার ম্যানগ্রোভ বাঁচাতে মুখে বললেও বাস্তবে তেমন কোনও পদক্ষেপ করেনি। আমফানের পরে ম্যানগ্রোভ প্রাচীর তৈরির পরিকল্পনা জানিয়েছিলেন সেই সময়ের বনমন্ত্রী। তারপর দু'বছর কেটে গেলেও কিছুই হয়ে ওঠেনি। এতদিন মানুষের বঞ্চনা, বেঁচে থাকার দাবি নিয়ে লড়াই চলেছে। এবার তাই ম্যানগ্রোভ অরণ্য রক্ষা ও পরিবেশ রক্ষার লড়াইয়ে নামল সিপিআই(এম)-র যুব সংগঠন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন