নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে ফের চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের হাতে। মানিক ঘনিষ্ঠ ব্যক্তির নামে ভাড়া নেওয়া এক টিচার্স ট্রেনিং ইন্সটিটিউট এবার ইডির আতশকাঁচের তলায়। শনিবার সকালেই সেখানে হানা দিয়েছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা আধিকারিকরা। ইতিমধ্যেই মহিষবাথানের সেই অফিসটি ঘিরে জল্পনা তুঙ্গে।
শনিবার সকালেই মহিষবাথানের অফিসে হানা দেয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার একটি দল। কিন্তু সেখানে পৌঁছে তাঁরা দেখেন যে অফিসটি তালাবন্ধ অবস্থায় পড়ে আছে। এরপর চাবিওয়ালাকে ডেকে এনে তালা ভাঙা হয়। এখনও সেখানে তল্লাশি অভিযান চলছে বলেই জানা গেছে। উত্তর চব্বিশ পরগণার মহিষবাথানে অবস্থিত চারতলা সেই অফিসটির নাম 'মিনার্ভা এডুকেশনাল অ্যান্ড ওয়েলফেয়ার সোসাইটি'। ইডি সূত্র মারফত জানা গেছে, ওই অফিসটি মানিক ভট্টচার্যের ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি তাপস মণ্ডলের নামে ভাড়া নেওয়া। বারাসাতের বাসিন্দা তাপসের বাড়িতেও আজ সকালে ইডির একটি দল জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হানা দিয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, অফিসে প্রায়শই আসতেন মানিক ভট্টাচার্য। অফিসটি রাত্রি ৮টা থেকে ৯টা অবধি খোলা থাকত। নিয়মিত কিছু মানুষও আসতেন। তবে, গত দু'মাস যাবৎ বন্ধ রয়েছে সেটি। অফিসটির মালিক গোয়েন্দাদের জানিয়েছেন, গত পাঁচ মাসের ভাড়া এখনও বাকি রয়েছে।
প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্তচলাকালীন, হঠাৎ করেই কেন বন্ধ করে দেওয়া হল মিনার্ভা ওয়েলফেয়ার? কেন রাতারাতি খুলে ফেলা হল অফিসের সাইনবোর্ড?
ইডি সূত্রের খবর, চাকরি পাওয়া বেশকিছু অকৃতকার্য প্রার্থী এবং ফিল্ড এজেন্টদের জিজ্ঞাসাবাদের পর জানা গেছে, মিনার্ভা সোসাইটি থেকেই তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য লিস্ট তৈরী করা, চাকরিপ্রার্থীদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা এইসব কাজ করতেন। নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত যাবতীয় কার্যক্রম এই অফিস থেকেই চলত বলে অনুমান ইডি আধিকারিকদের। এছাড়াও, চাকরি সংক্রান্ত বিভিন্ন কোর্স করানোর নামে ঘুষ নেওয়ার প্রক্রিয়াও চলত মিনার্ভা থেকেই।
পাশাপাশি, OMR শিট বা সাদা খাতা জমা দিয়ে যারা চাকরি পেয়েছিলেন সেই সংক্রান্ত কোনও নথি মহিষবাথানের অফিসে আছে কিনা সেটাও খতিয়ে দেখছেন গোয়েন্দারা। সেন্টারের সিসিটিভি ফুটেজও চেক করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। ট্রেনিং সেন্টারে আদৌ কোনও কোর্স করানো হত কিনা, প্রার্থীদের কেউ চাকরি পেয়েছিলেন কিনা, পেলেও তা কত টাকার বিনিময়ে এইসব প্রশ্নের তদন্তেই নেমেছেন গোয়েন্দারা।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন