সকাল সাড়ে ৬টার সময় মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের বাড়িতে হানা দিয়েছিল ইডি। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্তও চলছে সেই তল্লাশি। সেই হিসেবে তল্লাশির ১১ ঘণ্টা অতিক্রান্ত। মন্ত্রীর সল্টলেকের বাড়িতে টানা তল্লাশির মধ্যেই বেনিয়াটোলায় তাঁর পৈতৃক বাড়িতেও হানা দিল ইডি। পাশাপাশি মন্ত্রীর পিএ অমিত দে'র এক বন্ধুর বাড়িতেও তল্লাশি চালাচ্ছেন ইডি আধিকারিকরা বলে জানা গিয়েছে।
রেশন দুর্নীতিকাণ্ডে বাকিবুর রহমানকে গ্রেফতার করার পরই বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের নাম উঠে এসেছিল। কারণ প্রাক্তণ খাদ্যমন্ত্রী ছিলেন তিনি। বৃহস্পতিবার সাড়ে ৬টা থেকে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের সল্টলেকের জোড়া বাড়িতে তল্লাশি শুরু করে ইডি। সাথে মন্ত্রীর আপ্ত-সহায়ক অমিত দের ২টি ফ্ল্যাটে তল্লাশি অভিযানে যায় ইডি। কিন্তু অমিত দে উপস্থিত না থাকায় তল্লাশি শুরু করতে পারেনি। ইডি সূত্রে খবর, মন্ত্রীর আপ্ত সহায়ক পুরীতে রয়েছেন এই মুহূর্তে। তিনি সেখান থেকে দ্রুত কলকাতায় ফিরছেন।
এই তল্লাশির মাঝেই জ্যোতিপ্রিয়র বেনিয়াটোলা লেনের বাড়িতে ইডির একটি দল পৌঁছে যায়। সেখানে দীর্ঘক্ষণ তল্লাশি চালায়। মন্ত্রী এখন ওই বাড়িতে না থাকলেও তাঁর আত্মীয়রা থাকেন। আত্মীয় ও প্রতিবেশীদের সাথেও কথা বলেন ইডি আধিকারিকরা। বেনিয়াটোলা লেনের বাড়িতে হানা দেওয়ার আগে হাওড়ায় মন্ত্রী ঘনিষ্ঠ একজনের বাড়িতেও তল্লাশি চালায় কেন্দ্রীয় সংস্থাটি।
জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের পাশাপাশি আপ্ত সহায়কের নাগেরবাজারের একটি ফ্ল্যাটে এবং ভগবতী পার্কের একটি ফ্ল্যটে তল্লাশি চালাতে যায় ইডি। কিন্তু ফ্ল্যাট তালাবন্ধ থাকায় তল্লাশি অভিযান ব্যাহত হয়। ইডি সূত্রে খবর, প্রয়োজনে আদালত থেকে অনুমতি নিয়ে এসে তালা ভেঙে ঢোকা হবে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, অমিত দে নিজেকে মন্ত্রীর পিএ হিসেবেই পরিচয় দিতেন। তাঁরও যথেষ্ট প্রভাব ছিল বলেই জানা যাচ্ছে। রনি নামের অমিত দের এক বন্ধুর বাড়িতেও হানা দেয় ইডি।
প্রায় ১২ ঘন্টা হতে চলল এখনও মন্ত্রীর বাড়িতেই রয়েছেন ইডির আধিকারিকরা। মূলত বাকিবুরের সাথে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের কী সম্পর্ক? রেশন দুর্নীতিতে তিনিও জড়িত কিনা তা খতিয়ে দেখছে ইডি। মন্ত্রীর বাড়ির বাইরে ভিড় করেছেন বহু মানুষ।
অন্যদিকে এদিন সাংবাদিক বৈঠক ডেকে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের বাড়িতে ইডি তল্লাশি নিয়ে বিজেপিকে তীব্র আক্রমণ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। তিনি বলেন, 'প্রতিদিন আমার মন্ত্রীদের হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। আমাদের হাজার হাজার কর্মী জেলে রয়েছে। বিজেপি নোংরা খেলা খেলছে'। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, 'মানুষ তল্লাশি দেখতে দেখতে ক্লান্ত হয়ে গেছে। এবার তল্লাশি নয় গ্রেফতারি দেখতে চায় সাধারণ মানুষ'।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন