মুর্শিদাবাদ কলেজ ও হাসপাতালে গত ৪৮ ঘন্টায় ১১ জন শিশুর মৃত্যু ঘটেছে বলে জানা গেছে। মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজের এসএনসিইউ ওয়ার্ডে একের পর এক শিশু মৃত্যুর ঘটনায় তোলপাড় গোটা জেলা। ইতিমধ্যেই পুরো ঘটনাটির তদন্ত শুরু করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
জানা গিয়েছে, একাধিক সদ্যজাত শিশুদের জঙ্গিপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল থেকে স্থানান্তর করা হয়েছিল মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। তাঁদের এসএনসিইউতে রাখা হয়েছিল। গতকাল তাদের মধ্যে ন'জন শিশুকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। মেডিকেল কলেজের চিকিৎসকদের কোনো গাফিলতি ছিল না বলেই জানানো হচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে।
চিকিৎসকদের দাবি, জঙ্গিপুরে এখনও এসএনসিইউ বা পিকুর ব্যবস্থা নেই। শিশুদের অবস্থা খারাপ হওয়ায় তাঁদের মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়েছিল। তাদের পরিস্থিতি বুঝে এসএনসিইউ বা পিকুতে ভর্তি করা হয়েছিল। কিন্তু ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এক এক করে মৃত্যু হয় ন'জনেরই। পরেরদিন আরও দুজনের মৃত্যু হয়। জঙ্গিপুর হাসপাতালে এসএনসিইউ তৈরির কাজ চলছে। আগামী এক মাসের মধ্যে কাজ হয়ে যাবে বলে দাবি কর্তৃপক্ষের।
মৃত ৯ জন শিশুর প্রত্যেকেরই ওজন ছিল স্বাভাবিকের থেকে অনেকটা কম। বেশিরভাগ শিশুর জন্মের পর ওজন ছিল ৪০০-৫০০ গ্রাম। যেখানে দেড় কেজি ওজন হলে সংক্রমণ এড়ানো যায় বলে জানানো হচ্ছে চিকিৎসকদের তরফে। এই ঘটনায় মুর্শিদাবাদের মা ও শিশুদের স্বাস্থ্য পরিষেবা যে বেশ সংকটে তা পরিলক্ষিত। পাশাপাশি উঠে এসেছে, মুর্শিদাবাদের জেলা হাসপাতালের বেহাল দশা। পাশাপাশি এত শিশু মৃত্যুর ফলে কার্যত সামনে এসেছে জেলায় মায়েদের অপুষ্টির ছবিও।
ন্যাশনাল ফ্যামিলি এবং হেলথ সার্ভে ৫ এ উঠে এসেছিল এই সংকটের ছবি। ২০১৯-২০ সালের সমীক্ষাতে জানা গিয়েছিল, জেলার ২০-২৪ বছরের মহিলাদের মধ্যে ৫৫.৪ শতাংশেরই বিয়ে হয়ে গেছে ১৮ বছরের মধ্যে। অন্যদিকে, মুর্শিদাবাদের ১৯-৪৯ বছরের মহিলাদের মধ্যে ৭৭.৬ শতাংশই ভোগে রক্তস্বল্পতায়। এনএফএইচ ৪ এ এই পরিসংখ্যানটি ছিল ৫৭.৫ শতাংশ। তবে এই ঘটনার উন্নতির স্বার্থে কোনো কার্যকারি পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি তা বর্তমানের শিশু মৃত্যু দেখেই স্পষ্ট।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন