মাধ্যমিকে প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়া রুখতে নয়া পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল পর্ষদের পক্ষ থেকে। প্রত্যেক প্রশ্নপত্রে ছিল এক ইউনিক কিউআর কোর্ড। পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা বাতিল করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাতেও কোনও লাভ হয়নি। বাংলার পর ফের ইংরাজি প্রশ্ন ফাঁস হল। শনিবার মালদহে প্রশ্ন ফাঁসের জেরে ছ’জন পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে। উল্লেখ্য, শুক্রবারও মালদা থেকেই ফাঁস হয়েছিল বাংল প্রশ্ন।
শনিবার ছিল মাধ্যমিকের দ্বিতীয় পরীক্ষা ইংরাজি। জানা গেছে, এদিন পরীক্ষা শুরুর কিছু পরে মালদার এনায়েতপুর হাইস্কুল থেকে প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়ে যায় বলে জানা গেছে। এই ঘটনায় অভিযুক্ত ছ’জনের পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে। যার মধ্যে চারজন ছাত্র ও দু’জন ছাত্রী ছিল বলে জানা গেছে মধ্য শিক্ষা পর্ষদের তরফ থেকে।
পর্ষদ সূত্রে এ-ও জানা গিয়েছে, ধরা পড়ার হাত থেকে বাঁচতে কৌশল করে প্রশ্নপত্রে থাকা কিউআর কোড লাল কালি দিয়ে কেটে দিয়েছিল অভিযুক্ত পরীক্ষার্থীরা। তবে তাতে লাভ হয়নি। বিশেষ প্রযুক্তিতে কিউআর কোডের উপর থাকা লাল কালি মুছে ফেলে পর্ষদ। এর পর কিউআর কোড স্ক্যান করে পর্ষদের কর্মীরা জানতে পারেন, কোন জায়গার কোন পরীক্ষার্থীর হাতে ওই প্রশ্নপত্র পড়ে।
ওই কোডে যে সিরিয়াল নম্বরটি ‘এনক্রিপটেড’ রয়েছে, সেই কোড দেখেই বোঝা যায়, প্রশ্নপত্রটি কোন জেলায় গিয়েছে। পাশাপাশি, কোন স্কুলে ওই প্রশ্নপত্র গিয়েছিল, তা-ও জানা যায় সিরিয়াল নম্বর থেকে। তারপর স্কুলের সঙ্গে যোগাযোগ করে ওই প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা দেওয়া পরীক্ষার্থীর ক্রমিক নম্বর জানা যায়। ইতিমধ্যেই, তাদের সব পরীক্ষাও বাতিল করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, শুক্রবারও পরীক্ষা শুরুর কিছুক্ষণ পর প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়। সেটাও মালদা জেলা থেকে। এর পরেই তড়িঘড়ি পদক্ষেপ নেয় পর্ষদ। কিউআর কোড স্ক্যান করে চিহ্নিত করা হয় মালদহের দুই পরীক্ষার্থীকে। পরীক্ষার্থীদের সম্পূর্ণ পরীক্ষা বাতিল করে মাধ্যমিকের রেজিস্ট্রেশনও বাতিল করে দিয়েছে পর্ষদ।
যদিও এই পুরো বিষয়টি চক্রান্ত বলেই মনে করছেন মাধ্যমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, ‘‘যারা এই কাজ করছে তারা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবেই করছে। আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। যেমনটা বাংলা পরীক্ষার সময়েও করা হয়েছিল। বিষয়টা আমরা খতিয়ে দেখছি। সব পরীক্ষার্থী মনোযোগ দিয়ে পরীক্ষা দিচ্ছে। শুধুমাত্র মালদহ জেলা থেকেই কেন এমনটা হচ্ছে তা-ও খতিয়ে দেখা হবে। কিউআর কোড মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে মানে স্পষ্ট যে, সচেতন ভাবেই করছে। এটা স্বাভাবিক নয়। মনে হয় বড় চক্রান্ত চলছে।’’
গত বছরই প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়া রুখতে একাধিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল পর্ষদের তরফ থেকে। কিন্তু তাতে কোনও লাভ হয়নি। চলতি বছর তাই তার থেকে একধাপ এগিয়ে সর্বভারতীয় পরীক্ষার নিয়মে মাধ্যমিকের প্রশ্নেও কিউআর কোর্ড দেওয়া হয়েছিল।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন