একদিকে কংগ্রেসের ডাকা বনধ চলছে, অন্যদিকে কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দু খুনের প্রত্যক্ষদর্শী নিরঞ্জন বৈষ্ণবের মৃতদেহ উদ্ধার হল ঝুলন্ত অবস্থায়। বুধবার এই দুই ইস্যুতে উত্তপ্ত হয়ে রইল ঝালদা। পাশাপাশি এই মৃত্যুর ঘটনাকে খুন বলে উল্লেখ করে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী।
নিহত কাউন্সিলরের স্ত্রী পূর্ণিমাদেবীও খুন হতে পারেন বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। তাঁর দাবি, তপন কান্দু খুনের ঘটনা ধামাচাপা দিতেই প্রত্যক্ষদর্শী নিরঞ্জনকে ‘খুন’ করা হয়েছে। এই ঘটনার রহস্য ফাঁস হলে অনেক তৃণমূল নেতার নাম জড়িয়ে পড়বে। কোটি কোটি টাকার মালিক ওই সব নেতাদের বাঁচাতেই এই খুন করার চক্রান্ত বলে উল্লেখ করেছেন প্রদেশ সভাপতি।
তিনি বলেন, ‘তপন কান্দুর পর এটা আরও একটা খুন। এরপর তপন কান্দুর স্ত্রীকেও খুন করা হতে পারে বলে আমার আশঙ্কা হচ্ছে।’ প্রসঙ্গত, ঝালদার কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দু খুনের ঘটনায় সিবিআই এখনও পুরোদমে তদন্ত শুরু করেনি। আজই সিবিআই গোয়েন্দাদের ঝালদায় যাওয়ার কথা। তার আগেই এদিন সকালে নিজের ঘর থেকে প্রতক্ষদর্শী নিরঞ্জনের দেহ মেলার ঘটনায় নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে।
তাৎপর্যের বিষয়, তাঁর দেহের পাশেই মিলেছে একটি সুইসাইড নোটও। তাতে তিনি পুলিশি হেনস্থার কথা উল্লেখ করেছেন। নিরঞ্জনের পরিবার ও প্রতিবেশীদের অভিযোগ, মানসিক চাপ থেকেই নিরঞ্জন আত্মঘাতী হতে পারেন। এদিন পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে বাধার মুখে পড়ে। স্থানীয় সূত্রের খবর, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়াদের সকালে নিজের ঘরে পড়াতেন নিরঞ্জন। আজ সকালেও পড়ুয়ারা পড়তে এসে তাঁকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পায়।
বাম নেতা সুজন চক্রবর্তী ঘটনাকে খুবই দুর্ভাগ্যজনক বলে উল্লেখ করেন বলেন, ‘এটাই দেখাচ্ছে বাংলার আসল চেহারাটা কী। তদন্তে প্রভাব ফেলা কাকে বলে, প্রমাণ লোপাট করে দেওয়া কাকে বলে, সেটাই যেন আরও একবার স্পষ্ট হয়ে উঠছে।’ সিবিআই গোয়েন্দাদের আজ যাওয়ার কথা। সেই তদন্ত শুরু হতেই কেন প্রত্যক্ষদর্শী একজনের দেহ পাওয়া গেল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তাঁর অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রীর কথা অনুযায়ী, ‘কেসটা সাজানো হচ্ছে’। সবটা প্রকাশ হয়ে যায় কিনা, তাই ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন