চাকরি দেওয়ার নামে প্রার্থীদের হাতে ভুয়ো অফার লেটার তুলে দেওয়ার অভিযোগ উঠল খোদ রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে। গত মঙ্গলবার হুগলির নোডাল অফিসে প্রায় ৩ হাজারের বেশি চাকরি প্রার্থীদের নিয়োগপত্র এসে পৌঁছায়। সারারাত ধরে সেগুলি বিলি করা হয়েছে। কিন্তু পরে জানা গেছে সেগুলি সবকটিই ভুয়ো।
গণশক্তি পত্রিকার একটি প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, এক ছাত্রের অভিভাবক ১৩ সেপ্টেম্বর চাকরির অফার লেটার হাতে পেয়ে ফোন করেছিলেন গুজরাটের ফানফার্স্ট কোম্পানির সেন্টার ইনচার্জ বেদপ্রকাশ সিং-কে। বেদপ্রকাশ বাবুকে অভিভাবক জানান, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীর কাছ থেকে তিনি অফার লেটার পেয়েছেন। নিয়োগপত্রে ফোন নম্বর দেওয়া হয়েছে বেদপ্রকাশের। তাঁর সাথে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে ১৪ সেপ্টেম্বর।
এরপর বেদপ্রকাশ বাবু স্পষ্টভাবে জানান, যে অফার লেটার দেওয়া হয়েছে তা সম্পূর্ণ ভুয়ো। এটা ঠিক যে, গুজরাটে সুজুকি কোম্পানির সাথে ফানফার্স্টের আইটিআই নিয়ে প্রশিক্ষণ কর্মসূচি চলে। গুজরাটে যারা আসে তাঁদের কাছে ইনচার্জের নামেই অফার লেটার যায়। সেখানে ইনচার্জের ফোন নম্বরও দেওয়া থাকে। কিন্তু এই অফার লেটারকে খুব সুষ্ঠুভাবে 'গলত তরিকা সে' ব্যবহার করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, চাকরির অফার লেটারে বিহার, উত্তরপ্রদেশের ছাত্রছাত্রীদের ১১-১৪ সেপ্টেম্বরের মধ্যে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছিল। তাঁরা এসেও গেছে। কিন্তু বাংলা থেকে কাউকে নিয়োগ করার কথা ছিল না। তারপরেও পশ্চিমবঙ্গ থেকে ক্রমাগত ফোন আসছে। আমাদের অফার লেটার নিয়ে জাল করা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সাথে আমাদের কোনও সম্পর্ক নেই।
প্রসঙ্গত, 'উৎকর্ষ বাংলা' প্রকল্পের মাধ্যমে রাজ্যের কারিগরি শিক্ষা বিভাগ থেকে তরুণদের প্রশিক্ষণ ও চাকরির কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই অনুযায়ী গত ১২ সেপ্টেম্বর নেতাজী ইণ্ডোর স্টেডিয়ামে ১০ হাজার অফার লেটার দিয়েছেন মমতা ব্যানার্জী।
সূত্রের খবর, এর মধ্যে হুগলী জেলার ১০৭ জনকে ফোন করে হুগলী এইচআইটি কলেজ থেকে নিয়োগপত্র সংগ্রহ করার কথা জানানো হয়। গত মঙ্গলবার প্রত্যেকের ফোনে একটি পিডিএফ পাঠানো হয়। কিন্তু নিয়োগপত্রে দেওয়া নম্বরে ফোন করে তাঁরা জানতে পারে পুরো প্রশিক্ষণের ব্যাপারটাই ভুয়ো।
এ প্রসঙ্গে সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেন, বেকারির জ্বালা নিয়ে মশকরা করছে সরকার! স্বয়ং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীই চাকরির জাল নিয়োগপত্র বিলি করেছেন। প্রাইভেট গ্যারেজ, ঠিকায়, ডেলিভারি বয় হিসেবে আপনাকে বেসরকারি নিয়োগ কে করতে বলেছে? সরকারি শুন্যপদগুলো কি বিক্রি করে টাকা তোলার জন্য রেখে দিয়েছেন?
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন