কেলেঘাই নদীর বাঁধ ভেঙেছে। তার জেরে ভয়াবহ অবস্থা দুই মেদিনীপুরের। বছরের অন্যান্য সময় যে নদীগুলিতে জল একেবারেই কম থাকে, বর্ষায় সেগুলিই ভয়াল রূপ নেয়। যেমন শিলাবতী, কেলেঘাই। ফুলেফেঁপে উঠে কার্যত ধ্বংসলীলা চালাচ্ছে। পটাশপুর ১ নম্বর ব্লকের কাছে কেলেঘাই নদীর বাঁধ ভেঙে বিপত্তি ঘটল।
স্থানীয় সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার রাত দেড়টা নাগাদ বাঁধ ভেঙে গ্রামে জল ঢুকতে শুরু করে। এর জেরে পটাশপুর ১ ও ২ নম্বর ব্লকের বহু জায়গা প্লাবিত হয়েছে। পাশাপাশি ভগবানপুর এক ও দুই ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পটাশপুর বাজারে জল থৈথৈ করছে।
স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে খবর, প্রায় ২০০টি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় নিরাপদ জায়গায় সরানো হয়েছে প্রায় ৮০ হাজার মানুষকে। টানা চার দিনের বৃষ্টিতে বাগুই ও কেলেঘাই নদীর জলস্ফীতি ঘটেছে। ভেঙে পড়েছে অসংখ্য সাঁকো, কালভার্ট, সেতু, ফেরিঘাট, অসংখ্য মাটির ঘরবাড়ি। জমিতে এক কোমর জল।
জলের স্রোতে ও দেয়াল চাপা পড়ে এখনও পর্যন্ত ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। প্রায় ৫ লক্ষ মানুষ জলমগ্ন। ৭৪ হাজার কাঁচা বাড়ি জলের তলায়। সরকারি তরফে এখনও কোনও সাহায্য এসে পৌঁছয়নি। ভগবানপুর এক ব্লকের বিভীষণপুর এলাকার স্কুলগুলিতে আশ্রয় নিয়েছেন বহু মানুষ।
বানভাসি মানুষদের অভিযোগ, প্রতিদিন এলাকায় বিধায়ক, মন্ত্রী, প্রশাসনের লোকজন এলেও তাঁরা শুধু বাঁধ পরিদর্শন করেছেন। কিন্তু কেউ দুর্গতদের সাহায্যে এগিয়ে আসেননি। খাবার জোটেনি তাঁদের। শুক্রবার সকালে নতুন করে চারজনের দেহ উদ্ধার হয়। তার মধ্যে আছেন সবংয়ের এক বৃদ্ধ। দেওয়া চাপা পড়ে ঘুমন্ত অবস্থায় তাঁঁর মৃত্যু হয়।
প্রসঙ্গত, বামেদের সমর্থনে প্রথম ইউপিএ সরকারের আমলে কেলেঘাই, বাগুই, কপালেশ্বরী সেতুর সংস্কার হয়। তৃণমূলের আমলে সেই কাজ থমকে যায় যায় বলে অভিযোগ।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন