টেন্ডার দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার হলদিয়া পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান তথা বিজেপি নেতা শ্যামল আদক। পুরসভার চেয়ারম্যান থাকাকালীন একাধিক কাজে টেন্ডার নিয়ে বড়সড় দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর 'বিশেষ ঘনিষ্ঠ' বলে পরিচিত শ্যামল। শনিবার রাতে তাঁকে গ্রেফতার করেছে হলদিয়ার সুতাহাটা থানার পুলিশ।
এর আগে শ্যামলের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া একটি মামলায় উচ্চ আদালতের রক্ষাকবচ পেয়েছিলেন তিনি। প্রায় ১ বছর ধরে বিভিন্ন টানাপোড়েনের পর অবশেষে অন্য মামলায় গ্রেফতার হলেন বিজেপি নেতা শ্যামল আদক। সুতাহাটায় ট্রেকার এবং অটো স্ট্যান্ডে জমি কেলেঙ্কারির মামলায় গ্রেফতার হন তিনি। পুলিশ জানিয়েছে, গত রবিবার ধৃতকে হলদিয়া মহকুমা আদালতে হাজির করানো হয়েছে। তাঁকে ১ দিনের জেল হেফাজত দিয়েছেন বিচারক। সোমবার তাঁকে তমলুকের বিশেষ আদালতে তোলা হবে।
পুলিশ সূত্রের খবর, গত ২৯ সেপ্টেম্বর হলদিয়ার ভবানীপুর থানায় শ্যামলের বিরুদ্ধে টেন্ডার দুর্নীতির অভিযোগ জানান এক ব্যবসায়ী। মূলত সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই শ্যামলকে থানায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয়। হাজিরা না দেওয়ার এরপর তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে পুলিশ। বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করা হয়।
গত বছর তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান করেন হলদিয়ার প্রাক্তন পুর প্রধান শ্যামল আদক এবং প্রাক্তন কাউন্সিলর সত্যব্রত দাস। শ্যামল আদক পুর প্রধান থাকাকালীন সত্যব্রত ছিলেন পুরসভার টেন্ডার কমিটির চেয়ারম্যান। গত ১৩ অক্টোবর হলদিয়ার সুতাহাটায় ট্রেকার এবং অটোস্ট্যান্ডের জমি ঘিরে বড়সড় আর্থিক কেলেঙ্কারির অভিযোগ ওঠে সত্যব্রতর বিরুদ্ধে। পরে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। এই ঘটনার কিছুদিন পর একই মামলায় নাম জড়ায় শ্যামলের।
পুলিশের দাবি, মামলায় নাম জড়ানোর ফলে গ্রেফতারি এড়াতে দিল্লিতে গা ঢাকা দেন শ্যামল। এরপর জেলা পুলিশ তাঁর বিরুদ্ধে হুলিয়া জারি করে। তাঁকে খুঁজতে দিল্লি যায় হলদিয়ার ভবানীপুর থানার একটি দল। এরই মাঝে হাইকোর্টে রক্ষাকবচ পান বিজেপি নেতা। তবে, তাঁকে পুলিশের সাথে তদন্তে যাবতীয় সহযোগিতা করার নির্দেশ দেয় আদালত।
গত ২৮ নভেম্বর ভবানীপুর থানায় দুর্নীতির অভিযোগে অন্য একটি মামলায় হাজিরা দেন শ্যামল। পরে তিনি কলকাতা ফিরে যান। এরপর শনিবার সুতাহাটা থানায় দায়ের হওয়া অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠায় পুলিশ। অবশেষে সেদিন রাতে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে শ্যামল জানান, "পুলিশ সংবিধানের উর্ধ্বে উঠে কাজ করছে। কোর্ট আছে, কোর্টে বিচার হবে। আমি তো আইনের উপর বিশ্বাস রেখে চলছি।"
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন