প্রায় ১২দিন ধরে জলমগ্ন ঘাটাল। মঙ্গলবার সেখানে পৌঁছন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দুর্গতদের নিজের হাতে ত্রাণ তুলে দেন। একইসঙ্গে ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান নিয়েও তোপ দাগেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, কেন্দ্র এই প্ল্যান বাস্তবায়িত করতে অনুমতি দেয়নি। যদিও ২০১৬-২০২০ এই চারবছরের মধ্যে তিন বছর তাঁর সরকার এই প্ল্যানের জন্য অর্থ বরাদ্দ করলেও কোনও খরচ করেনি।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনের আধিকারিক জানান, যে মাস্টারপ্ল্যানের কথা মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সেই টাকা রাজ্যের দেওয়ার কথা। অর্থ দপ্তর থেকে টাকা বরাদ্দ করার কথা। ২০১৬-১৭, ২০১৭-১৮-তে এই খাতে একটি টাকাও বরাদ্দ হয়নি। ২০১৮-১৯-এ বরাদ্দ ছিল ৭০ কোটি টাকা। কিন্তু রাজ্য দিয়েছিল ৩৯ কোটি ৯৯ লাখ ৯৭ হাজার টাকা। ২০১৯-২০ তে বরাদ্দ ছিল ৬০ কোটি টাকা। কিন্তু বছর শেষে একটি টাকা দেয়নি।
আর এবার? জেলার পূর্ত বিভাগের এক আধিকারিক জানান, বাজেটে বরাদ্দ হয়েছিল ১১৫ কোটি টাকা। কিন্তু নবান্ন থেকে অনুমোদন পায় তিন কোটি ৭৫ লক্ষ টাকা। কত টাকা খরচ হয়েছে, তা চূড়ান্ত হিসাব তৈরি হয়নি। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'কেন্দ্রের কাছে বারবার দাবি করেছি। ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান অনুমোদন না দিলে বারবার বন্যা হবে। কেন্দ্রের কাছে আবার মাস্টারপ্ল্যানের দাবি জানাব।'
এদিন হেলিপ্যাড তৈরি হয় কুশপাতা এলাকার অনুকুল আশ্রমের কাছাকাছি মাঠে। মুখ্যমন্ত্রী সেই আশ্রমে যান। তাঁর সঙ্গে ছিলেন ঘাটালের সাংসদ দেব। তিনি বলেন, 'বন্যার পরে কোটি কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া বদলে আগে থেকে খরচ করলে ঘাটালের মানুষেরই দুর্ভোগ হয় না।' এদিন মুখ্যমন্ত্রী বন্যাকে 'পরিকল্পিত', 'ম্যানমেড' বলেছেন।
তাঁর পরামর্শ, এই সময়ে একযোগে মিলেমিশে একে অপরের পাশাপাশি থাকুন। এর তিনি বন্যা দুর্গতদের অবস্থা, ত্রাণ কোনও কিছু নিয়ে একটা কথাও বলেননি। গ্রামবাসীর বক্তব্য, জল সরতে তিন-চার মাস সময় লাগবে। চাষ ও কাজ দুটোই বন্ধ। কোনও ফলন হবে না। মুখ্যমন্ত্রী তো কোনও কিছুই বললেন না।'
এখনও জলমগ্ন ঘাটাল শহরের ১১টি ওয়ার্ড। আটটি ওয়ার্ডে ৬/১০ ফুট জলের উচ্চতা। পানীয় জলের উৎস সবই জলের তলায়। বাড়ির ছাদে, স্কুলে, রাস্তায় তাঁবু খাঁটিয়ে দিন কাটছে তাঁদের।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন