গত কয়েকদিন ধরে গলা পর্যন্ত জমা জলে আটকে রয়েছেন তাঁরা। খাবার পানীয় জল, কোনও রকম ত্রাণই মেলেনি তাঁদের। দেখা মেলেনি কোনও জনপ্রতিনিধিদের। বন্যার্তদের দেখার জন্য যেন জলবিহারে গিয়েছিলেন কয়েকজন মন্ত্রী ও তৃণমূল নেতা। তাঁদের দেখে স্বাভাবিকভাবেই দুর্গতরা ত্রাণের দাবি জানান। পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে তাঁদের দিকে ভিড়লেনই না ওই নেতা-মন্ত্রীরা। জনরোষের আশঙ্কায় অনেকটা দূর দিয়েই তাঁরা চলে গেলেন।
যদিও তাঁদের নিজেদের জন্য ছিল ট্রাকভর্তি চা-বিস্কুট এবং খাবার। আর দুর্গতদের জন্য নিয়ে গিয়েছিলেন সামান্য কিছু ত্রিপল এবং পোশাক। একতলা পাকা বাড়ি, স্কুল সবই জলের তলায়। দরকার মাথা গোঁজার জন্য একটু ছাদ। একদিকে দুর্গত মানুষদের ভিড়, অন্যদিকে নৌকায় রাজ্যের মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া ও সন্ধ্যা টুডু। সঙ্গে তৃণমূলের কয়েকজন নেতা ও মহকুমাশাসক।
ঘাটাল ব্লকের মনসুকা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার ওই দুর্গতদের একটাই দাবি জল চাই জল চাই। মাথা গোঁজার ব্যবস্থা করুন। এদিকে ঝিরঝিরে বৃষ্টি। গত দুই মাসে প্রায় চারবার বন্যার মুখোমুখি হলে বাসিন্দারা। দ্বিতীয়বারের বন্যায় ঘরবাড়ি ভেঙে গিয়েছিল। যেগুলি টিকে রয়েছে সেগুলোর অবস্থাও সঙ্গীন। মাথা গোঁজার স্থানটুকুও মেলেনি। সামান্য কিছু ত্রিপল ও পোশাক ছাড়া মিলল না কিছুই। নৌকো ঘিরে অনেকেই ঝুলে পড়ে ছিলেন। কিন্তু তাতে বিপত্তির সম্ভাবনা তৈরি হয়।
অন্যদিকে সেচমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র চন্দ্রকোনায় পরিদর্শনে যাবেন বলে ঠিক করে পরে তা বাতিল করেন। ত্রাণ না পেলে জলবন্দি মানুষেরা সরব হতে পারেন, এই রিপোর্ট পেয়ে তিনি তার যাত্রা বাতিল করেন বলে অভিযোগ। চন্দ্রকোনা খামারবেড়িয়া গ্রামে দুটি বাঁধ দ্বিতীয়বারের বন্যায় ভেঙে গিয়েছিল।
একবার ব্লক প্রশাসনের তরফে ১০০দিনের কাজে তা মেরামত করা হয়। মূল বাঁধটি বাঁধার কাজ শুরু হলেও সম্পন্ন হয়নি। সেচ দফতরের ঠিকাদারি সংস্থার বিরুদ্ধে ঢিলেমির অভিযোগ তোলেন তাঁরা। বিডিও রথীন্দ্রনাথ অধিকারী বলেন, বৃষ্টির জন্য পরিদর্শন সম্ভব হয়নি। যদিও সামান্য ঝিরঝিরে বৃষ্টির জন্যেই যাত্রা বাতিল হয়ে গেল উঠছে প্রশ্ন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন