Haldia: ১১ বছরে হলদিয়ায় বন্ধ হয়েছে একাধিক কারখানা, কর্মহীন প্রায় ২৫ হাজার শ্রমিক

শিল্পনগরী হলদিয়াতেই শুধু গত ১১ বছরে ২৫ হাজার শ্রমিক কর্মহীন হয়েছেন। বন্ধ হয়ে গিয়েছে ছোট ও মাঝারি শিল্প মিলিয়ে প্রায় ৩০টি সংস্থা।
হলদিয়ায় এক্সাইড কারখানা
হলদিয়ায় এক্সাইড কারখানাছবি ফেসবুকের সৌজন্যে
Published on

গত প্রায় দু'বছরে কোভিড পরিস্থিতিতে কর্মহীনতার এক করুণ চিত্র ফুটে উঠেছে দেশজুড়ে। তার শরিক বঙ্গও। তবে শুধু কোভিড অবস্থা নয়, গত ১১ বছর ধরে একের পর এক কারখানা বন্ধ হয়েছে। কর্মসংস্থানের ক্ষেত্র সংকুচিত হয়েছে। শিক্ষিত বেকার যুবর সংখ্যা বেড়েছে।

শিল্পনগরী হলদিয়াতেই শুধু গত ১১ বছরে ২৫ হাজার শ্রমিক কর্মহীন হয়েছেন। বন্ধ হয়ে গিয়েছে ছোট ও মাঝারি শিল্প মিলিয়ে প্রায় ৩০টি সংস্থা। বন্ধ হয়েছে এক্সাইড। তবে বামেদের দাবি, হলদিয়ার এই অবস্থার জন্য বঙ্গ বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও কিছু কম দায়ী নন। তিনি হলদিয়ার কর্তা হয়ে ওঠার পর থেকে সেখানকার অবস্থা শোচনীয় হতে শুরু করে।

এক্সাইড কারখানার কথাই ধরা যাক। নিজেদের লোকদেরকেই কাজে নিতে হবে, এমনটাই দাবি শাসক দলের। তারপর শ্রমিকদের মজুরি থেকে কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ তো আছেই। এরপর স্থায়ী কর্মসংস্থানের সংখ্যাও কমিয়ে দেওয়া হয়।

প্রসঙ্গত, সোমবার থেকে এক্সাইড কারখানা বন্ধ থাকায় প্রায় ৬-৭ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে। শাসক দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে কাজ হারানোর আশঙ্কায় ভুগছেন শ্রমিকরা। এই পরিস্থিতিতে তৃণমূল দুই নেতাকে সাসপেন্ড করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছে।

পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন সূত্র জানাচ্ছে, ২০০৯-১০ সালে হলদিয়ায় ৭০টি কারখানা ছিল। সেখানে প্রায় ৫০ হাজার শ্রমিক কাজ করতেন। গত ১০-১১ বছরের দৈনিক কাজ করা সেই শ্রমিকের সংখ্যায় নেমে এসেছে ২৫-২৭ হাজারে। শুধু তাই নয়, বামফ্রন্টের আমলে স্থায়ী কর্মী ছিলেন মোট শ্রমিকের তিন ভাগ। বর্তমানে শ্রমিকের সংখ্যা মাত্র ৬৭ হাজার। ডেইলি সাপ্লাই ওয়ার্কারদের দিয়ে কাজ চালানোর চেষ্টা চলছে। তাঁরা দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে কাজ করেন।

অভিযোগ, স্থায়ী শ্রমিকের দরকার থাকলেও শাসক দলের চাপে নিয়োগ করতে পারছে না কারখানা কর্তৃপক্ষ। প্রতিমাসেই তৃণমূলের যে কোন স্তরে নেতাদের একটা মোটা অংকের কাটমানি দিতে হয় বলেও অভিযোগ উঠছে। যার জেরে অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। সেখানকার জায়গাও দখল করে নিচ্ছে শাসক দলের স্থানীয় নেতারা।

২০০৬ সালে হলদিয়ায় এননোর কোক কারখানা তৈরি হয়েছিল। সেটি গত সাত বছর ধরে বন্ধ হয়ে পড়ে আছে। ২০০৮ সালে তৈরি হয়েছিল রোহিত ফেরোটেক আয়রন কোম্পানি। সেটিও বন্ধ। এছাড়াও বন্ধ হয়ে যাওয়া তালিকায় রয়েছে মডার্ন, কনকাস্ট, জেভিএল, উড়াল-সহ আরও বেশ কয়েকটি কারখানা।

পাশাপাশি বন্ধ হয়ে যাওয়া এসব কারখানা থেকে কয়েকশো কোটি টাকা লোহার যন্ত্রাংশ চুরি হয়ে গিয়েছে। শিল্পনগরী হলেও তৃণমূলের দাপটে নতুন করে শিল্প হওয়ার আশা কেউ করছে না। বরং যেটুকু রয়েছে তাও বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় ভুগছে ওয়াকিবহাল মহল।

হলদিয়ায় এক্সাইড কারখানা
দেশীয় সম্পত্তি বিক্রির তালিকা প্রকাশ কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর - তালিকায় কলকাতা, হলদিয়া বন্দর

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in