আন্দোলনরত চাকরিপ্রার্থীর হাতে পুলিশের কামড়ের ঘটনা ইতিমধ্যেই ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়া সহ বিভিন্ন মাধ্যমে। যা ঘিরে সরগরম রাজ্য রাজনীতি। এরই মাঝে পুলিশের হয়ে প্রকাশ্যে সাফাই দিতে দেখা গেল তৃণমূল বিধায়ক অজিত মাইতিকে। পাল্টা প্রতিবাদে সরব হয়েছেন আক্রান্ত চাকরিপ্রার্থী অরুণিমা মণ্ডল।
বৃহস্পতিবার পশ্চিম মেদিনীপুরে তৃণমূলের এক সভায় উপস্থিত ছিলেন বিধায়ক অজিত মাইতি। সেখানে ভাষণ দেওয়ার সময় রবীন্দ্রসদনে চাকরির দাবিতে বিক্ষোভরত প্রার্থীদের নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেন তিনি। তাঁর কথায়, "পুলিশকে কামড়ালে পুলিশ কি রসগোল্লা ছুঁড়বে? এটা ভেবে দেখবেন। এইরকম একটা চক্রান্ত সারা বাংলা জুড়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে চলছে।"
অন্যদিকে, হাতের ক্ষত পরীক্ষার জন্য শুক্রবার সকালে সাগরদত্ত মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান অরুণিমা। সেখানে পরীক্ষার পর চিকিৎসকরা প্রেসক্রিপশনে হিউম্যান বাইট অর্থাৎ মানুষের কামড়ে ক্ষত বলে উল্লেখ করেছে।
তৃণমূল বিধায়কের এই কুরুচিকর মন্তব্যের পাল্টা অরুণিমা বলেন, "চিকিৎসক প্রেসকিপশনে লিখেছেন হিউম্যান বাইট। ওনার এই মন্তব্য নিয়ে কী বলব, জানি না। কিছু কথার উত্তর অপ্রাসঙ্গিক মনে হয়। উত্তর দিতে রুচিতে বাধে। এই ধরণের অসংবেদনশীল কথা সমাজকে খুব খারাপ বার্তা দিচ্ছে। সামাজিক অবক্ষয়ের জন্য নেতাদের এমন মন্তব্য ভীষণ ভাবে দায়ী। এই নৈতিক অধঃপতন থেকে মুক্তি চাই।"
অজিতের মন্তব্যের বিরুদ্ধে পাল্টা সিপিআই(এম) নেতা শমীক লাহিড়ী বলেন, "তৃণমূলের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করার জন্য কাউকে লাগে নাকি? সাদা চোখে সবাই দেখতে পাচ্ছে যত চোর, দুর্নীতিবাজ, ঠকবাজ, গুন্ডা, অস্ত্রকারবারকারি সব তো গিয়ে ওই পার্টিতে জুটেছে। গোটা পার্টিটা সমাজ বিরোধীদের গোডাউনে রূপান্তরিত হয়েছে। আর সবচেয়ে বড় ব্যাপার এটাই যে, পুলিশকে এই কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে।"
তিনি আরও বলেন, "একটা পুলিশ কামড়ে দিচ্ছে! কোন পুলিশ ম্যানুয়ালে লেখা আছে? কেন এখনও পর্যন্ত সেই পুলিশকে সাসপেন্ড করে বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেননি মুখ্যমন্ত্রী? এই আঁচড়ানো, কামড়ানোতেও ওনার নির্দেশ আছে নাকি? মন্ত্রী, বিধায়ক, সাংসদরা টাকা খাবে, চাকরি বিক্রি করবে, আর প্রতিবাদ করলেই পুলিশ নামিয়ে পেটানো হবে? এটা কোনও সভ্য সমাজে চলে নাকি?"
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন