ঘূর্ণিঝড় 'ডানা'র সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে আগাম প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিল রাজ্য। রাতভর নবান্নের কন্ট্রোলরুমে বসে পরিস্থিতির দিকে নজর রেখেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে ল্যান্ডফলের পর এ রাজ্যে তেমন প্রভাব ফেলতে পারেনি 'ডানা'। এমনকি উপকূলবর্তী দুই জেলা পূর্ব মেদিনীপুর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার থেকেও কোন বড় ক্ষয়ক্ষতির খবর আসেনি। তবে বেশ কিছু গাছ ভেঙেছে।
'ডানা'র প্রভাবে বৃহস্পতিবার থেকেই দক্ষিণবঙ্গের বিস্তীর্ণ অংশে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি শুরু হয়েছে। শুক্রবার ভোর থেকে বৃষ্টি শুরু হয়েছে কলকাতাতেও। আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে শুক্রবার দিনভর ভারী বৃষ্টিপাত হবে। পাশাপাশি অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনায়।
রাজ্যে দুই উপকূলবর্তী জেলা পূর্ব মেদিনীপুর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনায় সবথেকে বেশি ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করা হয়েছিল। প্রস্তুত রাখা হয়েছিল জেলা প্রশাসনকে। কিন্তু ল্যান্ডফলের পর কেমন কোন ক্ষয়ক্ষতির খবর মেলেনি পূর্ব মেদিনীপুরে। বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে দীঘার সমুদ্র অশান্ত থাকলেও শুক্রবার সকালে সমুদ্র অনেকটাই শান্ত বলে জানা গেছে। তবে ভারী বৃষ্টি শুরু হয়েছে দিঘা, শংকরপুর এবং তাজপুরে। সঙ্গে বইছে ঝড়ো হাওয়া।
অন্যদিকে, উপকূলবর্তী আরও এক জেলা দক্ষিণ ২৪ পরগনা থেকেও বড় ক্ষয়ক্ষতির খবর মেলেনি। বৃহস্পতিবার রাত তিনটের পর সুন্দরবন এবং সংলগ্ন এলাকায় ঝড় শুরু হলেও তা খুব বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি বলে জানা গিয়েছে। তবে উপকূলবর্তী এলাকায় শুরু হয়েছে ভারী বৃষ্টি। সঙ্গে বইছে ঝড়ো হাওয়া। বন্ধ রাখা হয়েছে ফেরি চলাচল। দমকা হাওয়ার প্রভাবে গঙ্গাসাগরের বিভিন্ন এলাকায় গাছ পড়ে রাস্তা অবরুদ্ধ হয়ে যায়। গাছ কেটে সেই সব রাস্তা পরিষ্কার করছেন বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর কর্মীরা।
কলকাতায় ৬০-৭০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ো হাওয়ার পূর্বাভাস ছিল। ভোর থেকে শহর এবং সংলগ্ন এলাকায় বৃষ্টি এবং ঝড়ো হওয়া শুরু হলেও ঘূর্ণিঝড় খুব বেশি প্রভাব বিস্তার করতে পারিনি মহানগরে। যদিও সবরকম আগাম প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিল কলকাতা পুরসভা। সারারাত পুরসভার কন্ট্রোলরুমে বসে পরিস্থিতি নজর রেখেছিলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম।
তবে 'ডানা'র প্রভাবে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টা থেকে শুক্রবার সকাল সাড়ে ৬টা পর্যন্ত ওড়িশার ভুবনেশ্বরের চেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে হলদিয়ায়। ভুবনেশ্বরে ওই সময়ের মধ্যে ২০.৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। হলদিয়ায় হয়েছে ৬৩ মিলিমিটার। ওই সময়ের মধ্যে ওড়িশার বালেশ্বরে ৪৮ মিলিমিটার, পারাদ্বীপে ৭৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে ওড়িশার চাঁদবালিতে। সেখানে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ১৪৫ মিলিমিটার।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন