মেরুকরণের রাজনীতি এবং প্রশান্ত কিশোরের ভোট কৌশল এবং মমতার জনমোহিনী নীতির কাছে হেরে গিয়েছে সংযুক্ত মোর্চা। রাজ্যের সপ্তদশ বিধানসভা নির্বাচনে বাম কংগ্রেস আইএসএফ সংযুক্ত মোর্চার ভরাডুবি কার্যত স্বীকার করে নিয়ে এক ভিডিও বার্তায় একথা জানালেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী।
অধীরের অভিযোগ - মমতা ব্যানার্জি তিনদিন এখানে থেকে সাম্প্রদায়িক প্রচার করেছেন। সেই প্রচারে মানুষ আমাদের ওপর ভরসা রাখতে পারেনি। শীতলখুচিতে যে গুলি চালানো হল তাতে যারা মারা গেল তাঁরা সবাই মুসলমান। এতে প্রচার হল, মোদী মুসলমান মারবে। দিদি বাঁচাবে। একটা ভয় ভীতির আবহ তৈরি করা হল। এই মেরুকরণের রাজনীতির মাঝে আমরা মানুষকে বোঝাতে ব্যর্থ হয়েছি। অথচ কংগ্রেস সারা দেশে মোদীর বিরুদ্ধে কংগ্রেস লড়ছে। ভোট এভাবে সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভাজিত হলে তা আগামীদিনে দুশ্চিন্তার কারণ হতে বাধ্য।
এবারের নির্বাচনে অধীর গড় মুর্শিদাবাদেও একটিও আসন পায়নি সংযুক্ত মোর্চা ৷ তিনি মনে করছেন, মেরুকরণের রাজনীতিতে একদিকে হিন্দু ভোট বিজেপি পেয়েছে। অন্যদিকে সংখ্যালঘু ভোট পেয়েছে তৃণমূল। ফলে প্রতিযোগিতায় টিকতে পারেনি সংযুক্ত মোর্চা ৷
মুর্শিদাবাদে তো বটেই, অধীরের খাসতালুক বহরমপুরেও মুখ থুবড়ে পড়েছে কংগ্রেস ৷ ফুটেছে পদ্ম। এবিষয়ে তাঁর ব্যাখ্যা, তৃণমূল ও বিজেপির লড়াইয়ের বাতাবরণে সংযুক্ত মোর্চা মানুষকে ভরসা জোগাতে পারেনি ৷ পাশাপাশি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনমোহিনী প্রকল্প, প্রতিশ্রুতি ও প্রশান্ত কিশোরের ভোটনীতি, সবকিছুই সংযুক্ত মোর্চাকে কয়েক গোল দিয়েছে।
মুর্শিদাবাদে ২২ আসনের মধ্যে ২০টি আসনের নির্বাচন হয়েছিল সপ্তম ও অষ্টম দফায়। এরমধ্যে ১৮টি আসন গিয়েছে তৃণমূলের ভোটব্যাঙ্কে। কংগ্রেস বা বাম কেউই খাতা খুলতে পারেনি।
অধীর বলেন, "আমাদের মূল লক্ষ্য ছিল সংযুক্ত মোর্চার জোটের মাধ্যমে কংগ্রেসের শক্তিকে রক্ষা করা ৷ কিন্তু তা হয়নি ৷ আমরা ব্যর্থ হয়েছি ৷ মানুষ আমাদের ভোট দেয়নি ৷ মুর্শিদাবাদ-সহ সারা পশ্চিমবঙ্গে আমাদের ভয়াবহ খারাপ ফলাফল হয়েছে ৷ যা আমরা কল্পনাও করতে পারিনি। রাজনীতি কোন পথে যাচ্ছে সেটা ভেবে দুশ্চিন্তা হচ্ছে ৷"
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন