একদিকে ‘দুয়ারে রেশন’ চলছে পশ্চিমবঙ্গে। অন্যদিকে, রেশনের আওতার বাইরে চলে যাচ্ছেন হাজার হাজার মানুষ। রেশন থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। জানা যাচ্ছে, স্বাধীনতা দিবসের পর মাত্র দুদিনের ব্যবধানে এ রাজ্যে রেশন কার্ডধারী মানুষের সংখ্যা কমেছে ৭৪ হাজার ৫৬৫ জন।
১৩ আগস্ট, শনিবার রাজ্যে মোট রেশন কার্ডের সংখ্যা ছিল ৯ কোটি ১৩ লক্ষ ৩৩ হাজার ৮৫ টি। মাঝে দু’দিনের ছুটি ছিল। রবিবার এবং সোমবার। সোমবার স্বাধীনতা দিবস ছিল। আর, ১৬ আগস্ট, মঙ্গলবার সেই রেশন কার্ডধারী মানুষের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯ কোটি ১২ লক্ষ ৫৮ হাজার ৫২০ টি। অর্থাৎ, মাত্র দুদিনের ব্যবধানে এ রাজ্যে প্রায় পৌনে এক লক্ষ রেশন কার্ডধারী মানুষের সংখ্যা কমেছে।
রাজ্যের খাদ্য দপ্তর সূত্রে খবর, ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে রাজ্যে রেশন কার্ড ছিল ১০ কোটি ৫০ লক্ষ ৭০ হাজার ৬৭৯ জনের। এখন, প্রায় এক বছর পর রাজ্যে রেশন কার্ডধারী মানুষের সংখ্যা হয়েছে ৯ কোটি ১২ লক্ষ ৫৮ হাজার ৫২০। অর্থাৎ প্রায় এক বছরের মধ্যে রাজ্যে কমেছে ১ কোটি ৩৮ লক্ষ ১২ হাজার ১৫৯ জন রেশন কার্ডধারী মানুষের সংখ্যা।
এনিয়ে মুখ খুলেছেন অল ইন্ডিয়া ফেয়ার প্রাইস শপ ডিলারস ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বস্তর বসু। তিনি জানান, ‘সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ আছে যে, কোনও ব্যক্তিকে রেশন থেকে বঞ্চিত করা যাবে না। রাজ্য সরকারের লিখিত নির্দেশে আছে যে, বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে যদি কেউ আটকে যান, তাহলে আধার কার্ডের নম্বর মিলিয়ে রেশন দিতে হবে। কিন্তু বাস্তবে তা হচ্ছে না। আধার কার্ডের নম্বর দিয়ে রেশন দেওয়া যাচ্ছে না। যাঁদের আধার কার্ড নেই, বিশেষ করে শিশুদের, তাঁদের কার্ড ব্লক করে দেওয়া হচ্ছে।’
বিশ্বস্তর বসু দাবি করেন, ‘মানুষ রেশন না পেয়ে আমাদের বলছেন। দোকানে অভিযোগ জানাচ্ছেন। কিন্তু আমাদের কিছুই করার নেই। আমরা জানিয়েছি।’
এই নিয়ে রাজ্য সরকার চুপ কেন? বিরোধীদের অভিযোগ, মমতা ব্যানার্জির সরকার রেশনে কার্ড কমিয়ে খরচ কমাতে চাইছে। তবে, রাজ্যের খাদ্য দপ্তরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ‘কিছু ভুয়ো এবং ডুপ্লিকেটেড রেশন কার্ড ছিল। বায়োমেট্রিক চালুর পর সেই কার্ডগুলি বাতিল হচ্ছে। এছাড়া অনেকে মারা গেছেন। সে কারণে, রেশন কার্ডের সংখ্যা কমে এসেছে।’
তবে, আরও একটি সমস্যা সামনে এসেছে। তা হল, খাদ্য দপ্তরের এক আধিকারিক স্বীকার করেছেন, “এখন অনেক কার্ড ডিঅ্যাক্টিভিটেড, যাঁরা সত্যিই রেশন গ্রাহক। ই-পজ পদ্ধতিতে হাতের আঙুল মেশিনে ছুঁইয়ে রেশন নিতে হচ্ছে মানুষকে। অনেকের ক্ষেত্রে আঙুলের ছাপ মিলছে না। সমস্যায় পড়ছেন তাঁরা।"
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন