শুক্রবার হুগলিতে একাধিক ব্যবসায়ীর অফিস ও বাড়িতে একযোগে হানা দেয় আয়কর দপ্তর। এঁরা সকলেই তৃণমূলের ঘনিষ্ঠ বলে জানা গেছে। হুগলির বিদায়ী সাংসদ তথা বিজেপি প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায়ের অভিযোগের পরেই এই তল্লাশি বলে অভিযোগ তৃণমূলের।
স্থানীয় সূত্রে খবর, শুক্রবার সকালে মগড়া ও বাঁশবেড়িয়ায় একাধিক ব্যবসায়ীর ঠিকানায় হানা দেন আয়কর দপ্তরের আধিকারিকরা। তৃণমূল ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী কমল দাস, বৈদ্যনাথ সাহা(বৈদ্য), সত্যরঞ্জন শীল(সোনা), দিলপ্রীত সিং, অভিজিৎ ঘট(টিংকু) সহ একাধিক ব্যবসায়ীর বাড়ি ও অফিসে চলছে তল্লাশি ও জিজ্ঞাসাবাদ। সঙ্গে রয়েছে সিআরপিএফ। যে সকল ব্যবসায়ীর বাড়িতে হানা চলছে এরা সকলেই ইটভাটা, কয়লা, বালি, মাটি, ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি ছাড়াও বিভিন্ন ব্যবসার সঙ্গে জড়িত।
ঘটনাচক্রে, সম্প্রতি ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিলেন হুগলির বিজেপি প্রার্থী লকেট। তাঁর অভিযোগ ছিল, ব্যবসায়ীরা দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত। সেই দুর্নীতির টাকা তৃণমূলে দেয়। আর সেই টাকা দিয়েই ভোট পরিচালনা করছে রাজ্যের শাসক দল। এই অভিযোগের পরেই আয়কর হানা হুগলিতে।
এই তল্লাশি প্রসঙ্গে মগড়ার সিপিআইএম নেতৃত্ব জানান, “যেখানে তল্লাশি চলছে তারা বিভিন্ন অবৈধ কাজের সঙ্গে যুক্ত। এরা নিজেদের তৃণমূল কর্মী বললেও, প্রচুর কালো টাকার মালিক। এদের অবৈধ অর্থেই তৃণমূল ভোট পরিচালনা করে। সিপিআইএম মনে করে এদের বিরুদ্ধে তদন্ত হওয়া উচিত। শুধু দেখতে হবে, কোনো বোঝাপড়া কেন্দ্রীয় সংস্থার সাথে যাতে না হয়। পুরো তদন্ত হওয়া উচিত এবং দোষীদের শাস্তি হওয়া উচিত। জনগণ এদের সম্পর্কে জানে এবং আমরাও বহু মিটিং মিছিলে এদের সম্পর্কে বলে এসেছি। এদের জীবনযাত্রা এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন সবটাই বেআইনি।“
অন্যদিকে এই তল্লাশি নিয়ে হুগলি-শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভাপতি অরিন্দম গুইন বলেন, “ব্যবসা করা কি অপরাধ? না কি তৃণমূল-ঘনিষ্ঠ হওয়া অপরাধ? লকেট চট্টোপাধ্যায় আগে থেকেই বলে রাখছেন, কোথায় ইডি যাবে, কোথায় সিবিআই যাবে আর কোথায় আয়কর দপ্তর যাবে। তার মানে এজেন্সিগুলো বিজেপি হয়ে গিয়েছে। আর যদি ব্যবসায়ীদের কথা বলি, তা হলে ইলেক্টোরাল বন্ডটা কী! বিজেপি কত টাকা নিয়েছে ব্যবসায়ীদের থেকে?”
এর পাল্টা লকেট চট্টোপাধ্যায় জানান, “পশ্চিমবঙ্গে সিন্ডিকেট, তোলাবাজি চলছে। যারা এ সব করছে, তাদের ছাড়া হবে না। নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, না নিজে খাব, না কাউকে খেতে দেব। আমরা তো তাঁর সৈনিক, দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই চলবে। দুর্নীতি, গুন্ডাগিরি, মাফিয়ারাজ চলছে রাজ্যে। এর শেষ দেখতে চাই। দুর্নীতি করলে কেউ ছাড় পাবে না।“
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন