ভবানীপুরের উপনির্বাচন নিয়ে মাথা ঘামানোর সময় নেই। বিজেপি নেতারা মুখে এসব কথা যতই বলুন না কেন, বাস্তব চিত্র আলাদা কথা বলছে। দলীয় সূত্রের খবর, ভবানীপুরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করে জন্য ইতিমধ্যেই কয়েকজন প্রথম সারির নেতাকে প্রস্তুত থাকতে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। তবে বিপুল সংখ্যক আসন নিয়ে তৃতীয় বার ক্ষমতায় আসার পর মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে উপনির্বাচনে কেউ লড়তে চাইছেন না। বরং বলা ভালো, নিজেদের রাজনৈতিক কেরিয়ারে কেউ হারের সংখ্যা বাড়াতে চাইছেন না।
হাইভোল্টেজ কেন্দ্র নন্দীগ্রামে শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে পরাজয়ের পর নিয়ম অনুযায়ী মুখমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ছয় মাসের মধ্যে কোনও একটি আসন থেকে জিতে আসতে হবে। সেই হিসাবে ভবানীপুর কেন্দ্রের জয়ী প্রার্থী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় কেন্দ্রটি ছেড়ে দেন। তবে মমতাই ওই কেন্দ্রে প্রার্থী হচ্ছেন, তা ঘোষণা করা না হলেও নিজের গড়েই তিনি লড়বেন বলে অনুমান।
এবারের বিধানসভা ভোটের মুখে শাসকদল ছেড়ে বিজেপিতে নাম লেখান অভিনেতা রুদ্রনীল ঘোষ। তিনিই ভবানীপুর কেন্দ্রে বিজেপির টিকিটে লড়েছিলেন। তাঁকে এরকম একটা কেন্দ্রে প্রার্থী করা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল বিজেপির অন্দরেই। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে রাজ্য বিজেপির একাংশের আপত্তি ধোপে টেকেনি। রুদ্রনীল ২৫ হাজারেরও বেশি ভোটে হেরে যান।
এদিকে, ভবানীপুরে লড়ার জন্য বিজেপি নেতা তথাগত রায় টিকিট পেতে দিল্লিতে দরবার করেছিলেন। এবার অবশ্য নিজেদের ব্যর্থতা বুঝতে পেরে রাজ্য বিজেপির একটি বড় অংশ চাইছে, ভবানীপুর থেকে তথাগতকেই দাঁড় করানো হোক। তবে ঘনিষ্ঠ মহলে তথাগত স্পষ্ট জানিয়েছেন, এবার মমতার বিরুদ্ধে লড়তে তিনি ভবানীপুর যাবেন না।
এবার দলবদলুদের টিকিট দেওয়ার সিদ্ধান্ত কাজ না করায় পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে সতর্ক অবস্থান নিয়েছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। ভবানীপুরে প্রার্থী নির্বাচনের দায়িত্ব রাজ্য বিজেপির ওপরেই ছাড়তে চাইলেও রাজ্য বিজেপি নেতারাও দায়িত্ব কাঁধে নিতে চাইছেন না। দলের এক আদি নেতার অভিমত, 'সব কিছুই তো দিল্লি ঠিক করেছে এতদিন। এটাও আর বাদ যায় কেন!'
কংগ্রেস ভবানীপুরে মমতার বিরুদ্ধে প্রার্থী না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আর বিজেপি বুঝে উঠতে পারছে না। সে ক্ষেত্রে রুদ্রনীলেরই ফের লড়ার সম্ভাবনা আছে। রুদ্রনীল বলেন, 'আমাকে এখনও এ বিষয়ে দল কিছু জানায়নি। দলের সিদ্ধান্তই আমার সিদ্ধান্ত। পার্টি যা নির্দেশ দেবে সেটাই মেনে চলার চেষ্টা করব।'
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন