খেজুরি বিষ্ফোরণ কাণ্ডে এবার নতুন মোড়। তৃণমূল নেতার বাড়ি থেকে আগ্নেয়াস্ত্র সহ লক্ষাধিক টাকা উদ্ধার করল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ (NIA)। গতকাল (বৃহস্পতিবার) রাতে আচমকাই তৃণমূল নেতার বাড়িতে তল্লাশি চালাতে পৌঁছাল এনআইএ।
বৃহস্পতিবার সারারাত ধরে খেজুরির ছোটো গরানিয়া এলাকার দাপুটে তৃণমূল নেতা তথা খেজুরি পঞ্চায়েত সমিতির কৃষি কর্মাধ্যক্ষ শ্যামল দাসের বাড়িতে তল্লাশি চালান এনআইএ আধিকারিকরা। এর পাশাপাশি রামচকে বাটুল জানার বাড়িতে তল্লাশি অভিযান চালায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এর সাথে আধার এবং ভোটার কার্ডও উদ্ধার করা হয়েছে। এনআইএ সূত্রের খবর, তল্লাশি অভিযান চালানোর সময় তৃণমূল নেতার বাড়ি থেকে একটি পিস্তলসহ নগদ ২ লাখ ৬৩ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।
এর আগেও বোমা বিষ্ফোরণ কাণ্ডে তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধানসহ বেশ কয়েকজনকে আগেই গ্রেপ্তার করেছিল এনআইএ। এই ঘটনার জেরে ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক চাপানউতোর তৈরী হয়েছে। বিজেপির তীব্র কটাক্ষের মুখে পড়েছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল। এ প্রসঙ্গে শাসক দলের নেতাদের বক্তব্য, এটি একটি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র। খেজুরির স্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ তথা তৃণমূল নেতা পার্থপ্রতিম দাস বলেন, "এটা রাজনৈতিক চক্রান্ত। বিজেপি নেতাদের মদতে এমন কাজ করছেন। রাজনৈতিকভাবে পেরে না উঠে কেন্দ্রীয় সংস্থা দিয়ে এমন কাজ করছেন৷"
এই মন্তব্যের পাল্টা হিসেবে কাঁথি সাংগঠনিক জেলার বিজেপির সাধারণ সম্পাদক তাপস কুমার দোলুই জানান, "আমরা এই ঘটনায় এনআইএ তদন্তের দাবি জানিয়েছিলাম। এনআইএ তার সঠিক তদন্ত করছে। তৃণমূল নেতার বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করেছে। খেজুরির তৃণমূল নেতার বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্রসহ টাকা উদ্ধার করেছে।"
প্রসঙ্গত, গত ৩ জানুয়ারী পূর্ব মেদিনীপুর জেলার খেজুরিতে পশ্চিম ভাঙনমারী এলাকার এক বাড়িতে ভয়াবহ বোমা বিষ্ফোরণ হয়েছিল। এই ঘটনায় নিহত হন ২ জন। এলাকায় তাঁরা তৃণমূল কর্মী নামেই পরিচিত ছিলেন। যখম হন আরও কয়েকজন। কিন্তু গেরুয়া শিবিরের দাবি ছিল, বোমা বানাতে গিয়েই তাঁদের মৃত্যু হয়েছে। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূল। এই ঘটনার পর রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন। সেই সময় তিনি এই ঘটনায় এনআইএ তদন্তের দাবি করেছিলেন।
পরবর্তীকালে এনআইএ খেজুরি বোমা বিষ্ফোরণ কাণ্ডে তদন্তের ভার নেয়। তদন্তের জেরে সমর শঙ্কর মণ্ডল, শেখ আরিফ বিল্লা এবং শহিদুল আলি খানকে গ্রেপ্তার করা হয়। সমর শঙ্কর মণ্ডল ছিলেন খেজুরি জনকা অঞ্চলের তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি ও জনকা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান। এছাড়াও বাকি দুজন ওই অঞ্চলে দাপুটে তৃণমূল নেতা বলেই পরিচিত ছিলেন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন