২০১৮ সালের শেষের দিকে ফরওয়ার্ড ব্লক ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন পরেশ অধিকারী। এর কয়েকদিন পর কার্যত চুপি চুপি মেখলিগঞ্জের একটি স্কুলে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষিকা হিসেবে যোগ দেন তাঁর মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারী। এই খবর জানাজানি হওয়ার পর সেইসময় এই নিয়ে তীব্র বিতর্ক শুরু হয়েছিল। এবার তার বিরুদ্ধে হওয়া মামলা নিয়ে কোচবিহারের স্থানীয় তৃণমূল নেতারা তীব্র সমালোচনা করেছে খোদ মন্ত্রীকেই।
অভিযোগ ছিল, কোচবিহারে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষক নিয়োগের জন্য এসএসসি যে তালিকা প্রকাশ করেছিল সেখানে তফশিলি জাতিভুক্তদের তালিকায় মেধাতালিকার প্রথম স্থানে নাম ছিল ববিতা বর্মণের। দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে লোপামুদ্রা মন্ডল ও ছায়া রায়ের নাম ছিল। অথচ পরবর্তী সময়ে দেখা যায় অঙ্কিতা অধিকারীর নাম ওয়েটিং লিস্টের প্রথম স্থানে। আরও অভিযোগ ছিল, ৩১ অগাষ্ট যখন কাউন্সেলিং হয়েছিল তখন সেখানে গরহাজির ছিলেন অঙ্কিতা। তারপরেও কিভাবে স্কুলে যোগ দিলেন তিনি? তাও আবার বাড়ির পাশে স্কুলে?
সম্প্রতি, তাঁর বিরুদ্ধে হাইকোর্টে মামলা দায়ের হলে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় সিবিআই দফতরে হাজিরার নির্দেশ দেন। পাশাপাশি পরেশ অধিকারীকে মন্ত্রীত্ব থেকে সরানোর জন্য মুখ্যমন্ত্রী এবং রাজ্যপালকে অনুরোধ করেছে আদালত। আদালতের রায়ের পর কোচবিহার জেলা তৃণমূলে ডামাডোল তৈরী হয়। একাধিক নেতা ক্ষোভ উগড়ে দেন বর্তমান শিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর ওপর। সাধারণ কর্মীদের মধ্যে বিভিন্ন প্রশ্ন উঠছে মন্ত্রীকে ঘিরে। তবে এই বিষয়ে মন্ত্রীর কোনো প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, নিজাম প্যালেসে হাজিরা দেওয়ার জন্য গতকাল রাতেই পদাতিক এক্সপ্রেসে করে রওনা দিয়েছিলেন সকন্যা মন্ত্রী। সেই ট্রেন সকালে শিয়ালদহে পৌঁছালে তা থেকে মন্ত্রী বা তাঁর মেয়ে কাউকে নামতে দেখা যায়নি। এই ঘটনায় নতুন করে একাধিক প্রশ্ন উঠছে। পরে যদিও তিনি বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সিঙ্গেল বেঞ্চের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে যান সেখানে বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন তা শুনতে রাজী হননি। এরপর তিনি কোন পদক্ষেপ করবেন সেইদিকে তাকিয়ে আছে রাজনৈতিক মহল।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন