অবশেষে ৫৫ দিন পরে গ্রেফতার সন্দেশখালির নিখোঁজ তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহান। রাতে মিনাখাঁ থেকে গ্রেফতার করে সকালেই তাঁকে বসিরহাট মহাকুমা আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়। আদালত তাঁকে ১০ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেয়। শাহজাহানের গ্রেফতারিতে আনন্দে মেতেছে সন্দেশখালি। মিষ্টি বিলি থেকে শুরু করে আবির খেলা চলছে গোটা গ্রাম জুড়ে।
কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশের পর তৃণমূলের তরফে শাহজাহানকে সাত দিনের মধ্যে গ্রেফতার করার কথা বলা হয়েছিল। সেই মতো ৭২ ঘণ্টার মধ্যেই গ্রেফতার হলেন সন্দেশখালির ‘নিখোঁজ’ তৃণমূল নেতা। আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কায় বৃহস্পতিবার ভোরেই তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় বসিরহাটের মহাকুমা আদালতে। রাখা হয় আদালতের জেলে। শাহজাহানের ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজত চাইলেও আদালত ১০ দিনের পুলিশ হেফাজত দেয় শাহজাহানকে।
অন্যদিকে, এদিন সকাল থেকেই পুলিশি নিরাপত্তায় ঘেরা রয়েছে গোটা সন্দেশখালি। বিভিন্ন জায়গায় রয়েছে পুলিশি তৎপরতা। কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে প্রায় প্রতিটা মোড়ে রয়েছে পুলিশ পিকেট। সঙ্গে করা হচ্ছে মাইকে প্রচার। এলাকার মোট ৪৯ জায়গায় জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারা। লাল আবির সাথে ভারত মাতার নামে জয়ধ্বনি দিয়ে উল্লাসে মেতেছেন এলাকাবাসীরা।
শাহজাহানের বিরুদ্ধে জমি দখল থেকে শুরু করে চাষের জমিতে নোনাজল ঢুকিয়ে জোর করে ভেড়িতে পরিণত করা, নারী নির্যাতন, ধর্ষণ, টাকা আত্মসাৎ সহ বহু অভিযোগ রয়েছে গোটা সন্দেশখালিজুড়ে। ইতিমধ্যেই তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে একাধিক জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু হয়েছে।
অন্যদিকে, শেখ শাহজাহানের গ্রেফতারিতে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরোক্ষ কৃতিত্ব আছে বলেই মনে করছে রাজ্যের শাসক দল। বৃহস্পতিবার সকালে নিজের এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে তৃণমূলের অন্যতম মুখপাত্র তথা রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ লেখেন, “আদালতের বাধা ছিল, পুলিশ কাজ করতে পারেনি। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সৌজন্যে আদালত বাধা সরিয়েছে। পুলিশ যা করার করেছে।”
উল্লেখ্য, এর আগে শহজাহানের গ্রেফতারি প্রসঙ্গে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সংবাদ মাধ্যমে জানিয়েছিলেন, “শেখ শাহজাহানকে যদি কেউ গার্ড করে, জুডিশিয়ারি গার্ড করছে। জুডিশিয়ারি স্টে তুলে দিক, তারপর যদি না করতে পারে, তখন আমাকে এসে বলবেন।“
এরপরেই কলকাতা হাইকোর্টে প্রধান বিচারপতির জানিয়ে দিয়েছিলেন, ‘‘স্পষ্ট ভাবে বলছি, পুলিশকে কোনও নির্দেশ দেওয়া হয়নি। ইডির মামলায় সিট গঠনের উপর স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছিল। আমরা পুলিশকে বলিনি, যে গ্রেফতার করা যাবে না।’’
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন