কনভয়ে হামলার ঘটনায় ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কুড়মি সমাজের বিবৃতি দাবি করেছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ডেডলাইন শেষের অনেক আগেই এই ঘটনায় জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করলো কুড়মি সমাজ। এই ঘটনাকে 'সাজানো নাটক' বলে দাবি করে, এর সিবিআই বা বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানালো তারা।
শনিবার ঝাড়গ্রাম শহরের একটি বেসরকারি লজে সাংবাদিক সম্মেলন দাকে ঘাঘর ঘেরা কমিটি। সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন রাজেশ মাহাতো, সুদীপ রায় মাহাতো সহ ঘাঘর ঘেরা কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্যরা। সেখানেই তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কনভয়ে হামলার ঘটনাকে ষড়যন্ত্র বলে উল্লেখ করে প্রশ্ন করা হয়, এত সাংবাদিক থাকা সত্ত্বেও হামলার কোনও ভিডিও ফুটেজ পাওয়া যায়নি কেন?
সুদীপ রায় মাহাতো প্রশ্ন তুলে বলেন, এতো মিডিয়া, সমাগত প্রত্যেকের হাতে স্মার্টফোন। তা সত্বেও পাথর ছোড়ার কোনো ছবি বা ভিডিও নেই কেন! যেখান দিয়ে কনভয় যাবে সেখানে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করেনি কেন প্রশাসন?
কুড়মি সমাজের প্রশ্ন, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম পেরিয়ে এসেছে তৃণমূলের নবজোয়ার কর্মসূচি। কোথাও পাথর ছোঁড়ার প্রয়োজন পড়ল না। শালবনীতে পাথর ছোড়ার প্রয়োজন হলো কেন? তাও আবার রাজ্যের মন্ত্রী এবং সাঁওতালদের প্রতিনিধিত্বকারী বীরবাহা হাঁসদাকে?
তাঁদের দাবি, বীরবাহা হাঁসদার উপর হামলার মিথ্যে গল্প ছড়িয়ে সাঁওতালদের ক্ষেপিয়ে দিয়ে কুড়মিদের সাথে তাঁদের লাগিয়ে দেওয়ার গভীর চক্রান্ত ছাড়া এটা আর কিছুই না।
কুড়মি নেতৃত্ব বলেন, তাঁদের আন্দোলন হিংসাত্মক নয়। জঙ্গলমহলে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন চালাচ্ছে তাঁরা, কোনওদিন তা হিংসার রূপ নিয়েছে, এমন প্রমাণ দিতে পারবেন না কেউ। খেমাশুলিতে রাতদিন হাজার হাজার কুড়মি আন্দোলনকারীরা অবরোধ করলেও, কোনওদিন স্টেশনের একটা বাল্ব, কাঁচ ভাঙেনি। কোনও গাড়ির ড্রাইভার, পথচারির উপর চড়াও হয়নি। গণতান্ত্রিক শান্তিপূর্ন আন্দোলনের প্রতীকরূপে সারা দেশে কুড়মি আন্দোলন পরিচিতি লাভ করেছে। কুড়মিরা যদি হিংসাত্মক হতো তবে হিংসা আরো অনেক জায়গাতেই ছড়িয়ে যেতে পারতো। শনিবার লোধাশুলিতেও বিক্ষোভ দেখিয়েছে কুড়মিরা। সেখানে বিক্ষোভকারীরা তৃণমূল পার্টি অফিসের সামনে জমায়েত হলেও পার্টি অফিসে কেউ ঢিল ছোড়েনি বা কোনও সমর্থককে বাজে কথা বলেনি।
সুদীপ মাহাতোর প্রশ্ন, অনেক খুনী মাওবাদীদের চাকরি দিয়ে থানায় পুষে রাখা হয়েছে।তাদের নকল কুড়মী সাজিয়ে শালবনীর ঘটনা ঘটানো হয়নি কে বলতে পারে? আর তৃণমূলীরা তাদের বিরোধীদের মিথ্যা মামলা দিয়ে শায়েস্তা করতে চায়। সেই পরিকল্পনারও অংশ হতে পারে এই ঘটনা।
হামলার ঘটনার নিন্দা জানিয়ে এই ঘটনার সঠিক তদন্তের দাবি তুলেছে কুড়মি সমাজ। পাশাপাশি যে পাঁচ জন কুড়মিকে আটক করা হয়েছে, তাঁদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন