‘নবজোয়ার’ কর্মসূচিতে বেরিয়ে বাঁকুড়ার জঙ্গলমহলে দফায় দফায় কুড়মিদের বিক্ষোভের মুখে পড়লেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার, বিকালে সিমলাপাল থেকে খাতড়া যাওয়ার পথে পরপর দু’ জায়গায় আটকা পড়েন তিনি। প্রথমবার বনকাটায় এবং দ্বিতীয়বার জামদায়।
এদিন, কর্মীদের ‘ঘাঘর ঘেরা’-র তেজ এতটাই বেশি ছিল যে, শেষমেশ আন্দোলনকারীদের শান্ত করতে গাড়ী থেকে নেমে আসতে হয় অভিষেককে। দুটি জায়গাতেই আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। শেষমেশ- পুলিশি সহায়তায় অভিষেক সেখান থেকে বের হন। তারপরই খাতড়ায় পৌঁছে আদিবাসীদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে তাঁদের অনুষ্ঠানে যোগ দেন। সেই ছবিও ফেসবুকে শেয়ার করেছেন অভিষেক।
বর্তমানে কুড়মি জনজাতির মানুষেরা হলেন অনগ্রসর শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত। দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা নিজেদের তফসিল উপজাতির স্বীকৃতির দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। পঞ্চায়েত ভোটের মুখে কুড়মিদের কয়েকটি সংগঠন রাজনৈতিক দলগুলির বিরুদ্ধে কড়া অবস্থান নিয়েছে। অন্যদিকে, কুড়মিদের এই দাবির বিরোধিতা করে আসছে এসটি সম্প্রদায়ভুক্ত আদিবাসী সমাজ।
এমন আবহে কুড়মিদের উপেক্ষা করে আদিবাসী সমাজের অনুষ্ঠানে অংশ নেন অভিষেক। এমনকি, কুড়মিদের বিক্ষোভের পরে আদিবাসী পোশাক পরে রানীবাঁধেতে পুজো দেন তিনি। বাঁকুড়ায়, এই পদক্ষেপে ‘বিপদের লক্ষণ’ দেখছেন বিশেষজ্ঞ মহল। অনেকেরই আশঙ্কা, কুড়মিদের উপেক্ষা করে যেভাবে আদিবাসী পোশাক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন অভিষেক, তাতে আগামী পঞ্চায়েত ভোটে কুড়মি সমাজ তৃণমূলের দিক থেকে মুখ ফেরাতে পারে৷ সেক্ষেত্রে জঙ্গলমহলে শাসকের ভোটে ধস নামার আশঙ্কা থাকছেই৷
জানা যাচ্ছে, এদিন জামদায় অভিষেকের সঙ্গে কথা বলার পর কুড়মি নেতারা তাঁকে স্পষ্ট জানান, অবিলম্বে তাঁদের দাবি মেনে কেন্দ্রের কাছে সংশোধিত সিআরআই রিপোর্ট পাঠাতে হবে রাজ্য সরকারকে। নইলে আগামী নির্বাচনে কুড়মি সম্প্রদায়ের ভোট রাজ্যের শাসকদলের পক্ষে যাবে না।
কুড়মিদের এই হুঁশিয়ারির মুখে অভিষেক জানান, এমনিতেই শাসক তৃণমূলকে ভোট দেয় না কুড়মি সম্প্রদায়। তিনি নলেন, ‘কুড়মিরা ভোট দিলে পুরুলিয়ায় আমরা ২ লক্ষের বেশি ভোটে হারতাম না। পুরুলিয়ার ৯টি আসনের মধ্যে ৬টি আমাদের হাতে নেই। আমি এখানে ভোটের রাজনীতি করতে আসিনি।’
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন