‘তরুণদের স্বপ্ন’ প্রকল্পের টাকা ঢুকছে জালিয়াতির অ্যাকাউন্টে - এমন অভিযোগ আগেই উঠেছিল। সেই ঘটনার তদন্তে নেমে চক্ষু চড়কগাছ আধিকারিকদের। শুধু ‘তরুণদের স্বপ্ন’ প্রকল্পের টাকা নয়, ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’, ‘বাধর্ক্য ভাতা’, ‘কৃষকবন্ধুর’ টাকাও ঢুকছে জালিয়াতির অ্যাকাউন্টে। এই চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আসার পরেই ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবারই এই ধরনের সমস্যার সমাধানের কড়া নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সমস্ত প্রকল্পে অনুদান দেওয়ার পদ্ধতি ‘লিক প্রুফ’ করার কথাও বলেছেন তিনি।
বেশ কয়েকদিন ধরে সামনে আসছে ‘তরুণদের স্বপ্ন’ প্রকল্পের অধীনে স্কুল পড়ুয়াদের ‘ট্যাব’ বা মোবাইল কেনার টাকা অন্য অ্যাকাউন্টে ঢুকছে। তদন্তের নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। আর তারপরেই সামনে আসে ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’, ‘বাধর্ক্য ভাতা’, ‘কৃষকবন্ধুর’ টাকাও ঢুকছে জালিয়াতি অ্যাকাউন্টে।
নবান্ন সূত্রে খবর, পূর্ব মেদিনীপুর, পূর্ব বর্ধমান এবং উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় সরকারি পোর্টালে ঢুকে প্রকৃত প্রাপকের বদলে অন্যের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই এমন প্রায় ৮০টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ‘ফ্রিজ’ করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, শুক্রবারই শীর্ষ সরকারি আধিকারিকদের এই ধরণের সমস্যা দ্রুত সমাধানের কড়া নির্দেশ দিয়েছেন মমতা। এছাড়া সমস্ত প্রকল্পে অনুদান দেওয়ার পদ্ধতি ‘লিক প্রুফ’ করার কথাও বলেছেন তিনি। এমনকী জালিয়াতির ফলে যেসব পড়ুয়ারা ট্যাব কেনার টাকা পাননি, সোমবার থেকে ফের তাঁদের টাকা দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে।
তদন্তকারীদের অনুমান, এই জালিয়াতির পিছনে রয়েছে পেশাদারি কোনও গ্যাং। নবান্ন সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শে রাজ্যের কয়েকটি জেলায় পড়ুয়াদের প্রাপ্য টাকা লোপাটের ঘটনার তদন্তভার সিআইডির হাতে দেওয়া হচ্ছে। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত পূর্ব বর্ধমান ও পূর্ব মেদিনীপুরে ২০০ টিরও বেশী ‘অবাঞ্ছিত ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট’ চিহ্নিত করা গেছে। যার মধ্যে ৮০ টি অ্যাকাউন্ট ইতিমধ্যেই ফ্রিজ করা হয়েছে।
তদন্তকারীরা আরও জানাচ্ছেন, এই অ্যাকাউন্টগুলির অধিকাংশই ঝাড়খণ্ড, বিহার, রাজস্থানের মতো রাজ্যের। তবে বাংলার মুর্শিদাবাদ, উত্তর দিনাজপুর ও নদীয়া জেলাতেও এমন কিছু অ্যাকাউন্টের হদিশ মিলেছে। উত্তর ২৪ পরগনার হাবড়া-অশোকনগর এলাকার বেশ কয়েকটি স্কুলের পড়ুয়াদের অ্যাকাউন্টেও হানা দিয়েছে জালিয়াতরা। শুক্রবার পর্যন্ত মোট ন’জন ছাত্রীর ‘ট্যাব’ কেনার টাকা লোপাটের ঘটনা সামনে এসেছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন