রামনবমীকে কেন্দ্র করে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় সম্প্রতি যে সাম্প্রদায়িক অশান্তি ছড়িয়েছে, তার বিরুদ্ধে ৯ ও ১০ এপ্রিল দুদিন ব্যাপী শান্তি ও সম্প্রীতি মিছিলের ডাক দিয়েছে বামেরা। শুক্রবার একটি প্রেস বিবৃতি দিয়ে একথা জানিয়েছেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, "মানুষের জীবন জীবিকার সমস্যা, তীব্র বেকারি, দারিদ্র্য, মূল্যবৃদ্ধি, দুর্নীতি, গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষার লড়াই সংগ্রামের মত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি থেকে দৃষ্টি ঘোরাতে এই পরিকল্পিত সাম্প্রদায়িক উত্তেজনার পরিবেশ তৈরি করা হচ্ছে। এর ফলে আদপে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন উভয় সম্প্রদায়ের গরিব মানুষজন, শ্রমজীবী জনগণ।"
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, "বাংলার সমাজ ও ধর্মীয় জীবনের অঙ্গ এমন অনেক ধর্মীয় উৎসবের সুদীর্ঘ ইতিহাস আছে এ কথা ভুলে গেলে চলবে না। পশ্চিমবঙ্গের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ঐতিহ্যকে ধ্বংস করার বিরুদ্ধে সঙ্গত কারণেই আমাদের সোচ্চার হতে হবে। বিভেদ সৃষ্টিকারী সাম্প্রদায়িক শক্তিকে রুখে দিয়ে জনগণের ঐক্য, হিন্দু-মুসলিম শিখ এসআইয়ের ঐক্য অটুট রাখতে বামপন্থী দলগুলি দুদিন ব্যাপী শান্তি মিছিলের আহ্বান জানাচ্ছে।"
৯ এপ্রিল হুগলির কোন্নগর থেকে উত্তরপাড়া পর্যন্ত শান্তি ও সম্প্রীতির মিছিল হবে। ১০ এপ্রিল অর্থাৎ সোমবার দুপুর আড়াইটের সময় একটি সংক্ষিপ্ত সভার পর হাওড়ার বালিখাল থেকে শিবপুর ট্রাম ডিপো পর্যন্ত মিছিল করবে ১০টি বামপন্থী সংগঠন।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, রামনবমী উপলক্ষ্যে হাওড়ার শিবপুরে মিছিল করেছিল বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সদস্যরা। আচমকাই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে সেই মিছিলকে কেন্দ্র করে। বেশ কিছু ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়াতে ভাইরাল হয় যাতে দেখা যায় রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা একের পর এক গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ভাঙচুর চালানো হয় একের পর এক দোকান। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রচুর পুলিশবাহিনী নামানো হয়।
আবার হুগলীর রিষড়াতেও রামনবমীর শোভাযাত্রাকে কেন্দ্র করে অশান্তি ছড়িয়ে পড়েছিল। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ। একাধিক দোকানে ভাঙচুর, পুলিশের গাড়িতে আগুনও লাগিয়ে দেওয়া হয়েছিল। ১২ জনকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে উত্তরবঙ্গ সফর অসম্পূর্ণ রেখেই কলকাতা ফিরে আসেন রাজ্যপাল। এলাকা পরিদর্শন করেছিলেন সি ভি আনন্দ বোস।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন