শেষ হাসি হাসলো বাম-কংগ্রেস। হাজার চেষ্টা করেও সাগরদিঘির কাবিলপুর গ্রাম পঞ্চায়েত দখলে নিতে পারলো না তৃণমূল। বোর্ড গঠন করলো বাম-কংগ্রেস। এই পঞ্চায়েতে বোর্ড গড়ার জন্য ঝাড়খণ্ডে আশ্রয় নেওয়া বাম-কংগ্রেসের জয়ী প্রার্থীদের তুলে আনার অভিযোগ উঠেছিল শাসকদল আশ্রিত দুষ্কৃতি ও পুলিশের বিরুদ্ধে।
বুধবার ছিল কাবিলপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠনের প্রক্রিয়া। তার আগে গতকাল ভোরে ঝাড়খণ্ড থেকে সাগরদিঘি পৌঁছান বাম কংগ্রেসের জয়ী প্রার্থীরা। গ্রামের মানুষ মিছিল করে প্রার্থীদের নিয়ে যান বোর্ড গঠনের জন্য। পুলিশ প্রশাসনের ঠান্ডা চোখ রাঙানি ও তৃণমূলের বাধা সত্ত্বেও ২৫ টি আসনের মধ্যে ১৪ টি আসন নিয়ে বোর্ড গঠন করেছে বাম-কংগ্রেস। পঞ্চায়েতের প্রধান হয়েছেন সিপিআইএমের রোজিনা বেগম এবং উপপ্রধান হয়েছেন কংগ্রেসের মমতাজ খাতুন।
প্রসঙ্গত, এই গ্রাম পঞ্চায়েতের বাম ও কংগ্রেসের জয়ী প্রার্থীদের ঝাড়খণ্ড থেকে তুলে আনতে তৎপর হয় সাগরদিঘি থানার পুলিশ, সিভিক ভলেন্টিয়ার ও তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। মঙ্গলবার দুপুরে ঝাড়খণ্ডের পাকুড়ের আশ্রয় শিবিরের বাইরে তিনটি গাড়ি করে প্রার্থীদের তুলে আনতে গিয়েছিলেন তাঁরা। পুলিশ জয়ী প্রার্থীদের গাড়িতে ওঠার জন্য প্রস্তাব দেয়। কিন্তু তাঁরা রাজি না হওয়ায় পুলিশ ও প্রার্থীদের মধ্যে রীতিমতো বচসা বাঁধে। এরপর লোকাল থানার পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। তখনই জয়ী প্রার্থীরা জানিয়েছিলেন, বোর্ড গঠন করবে তাঁরাই। তৃণমূলকে এক ইঞ্চিও জমি ছাড়বে না তাঁরা। নিজেদের ক্ষমতাতেই সঠিক সময়ে গ্রামে ফিরে বোর্ড গঠন করবে তাঁরা। সেই কথাই সকলে রাখলেন।
শুধু কাবিলপুর নয়, খড়গ্রামের কীর্তিপুর, জলঙ্গির খয়রামারি গ্রাম পঞ্চায়েত, লালগোলার আইড়মারী কৃষ্ণপুর গ্রাম পঞ্চায়েত সহ মুর্শিদাবাদের একাধিক পঞ্চায়েত শাসকদলের হাতছাড়া হয়েছে। সেগুলিতে বোর্ড গঠন করেছে বিরোধীরা।
খড়গ্রামের কীর্তিপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের মোট আসন ৩০টি। সিপিআইএম জেতে ৩টি, কংগ্রেস জয়লাভ করে ১২টি, নির্দল প্রার্থী পায় ১টি এবং তৃণমূলের ঝুলিতে যায় ১৪টি আসন। বোর্ড গঠন করেছে বাম-কংগ্রেস ও নির্দল। কংগ্রেসের পিঙ্কি বেগম প্রধান এবং নির্দল প্রার্থী সাহিনা খাতুন উপপ্রধান হয়েছেন।
আবার লালগোলার আইড়মারী কৃষ্ণপুর গ্রাম পঞ্চায়েতও হাতছাড়া হয়েছে তৃণমূলের। বোর্ড গঠন করেছে বাম-কংগ্রেস। এই পঞ্চায়েতের আসন সংখ্যা মোট ১৪টি। সিপিআইএম জিতেছিল ৯টি, কংগ্রেস ২টি এবং তৃণমূল পায় ৩টি আসন। এই পঞ্চায়েতের প্রধান হন সিপিআইএম-র পঞ্চায়েত সদস্য আওয়াল হোসেন এবং উপপ্রধান হন সিপিআইএম-র সুলতানা বিবি।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন