কে হচ্ছেন বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান? তা নিয়ে এখন জোর চর্চা শুরু হয়েছে। অশীতিপর ‘তরুণ’ বিমান বসু নিজে থেকে এই নিয়ে স্পষ্ট করে কিছু না বললেও তিনি পদ আঁকড়ে ধরে থাকতে চান না বলে দলের অন্দরে মতামত জানিয়ে দিয়েছেন। তাঁর সিদ্ধান্তের পিছনে ব্যাখ্যাও দিয়েছেন।
তাছাড়া বয়সের উর্ধ্বসীমা অনুযায়ী কেন্দ্রীয় কমিটি বা পলিটব্যুরোর সদস্য থাকার কথা নয় তাঁর। তাঁর জায়গায় উঠে আসছে সূর্যকান্ত মিশ্রের নাম। সিপিআই(এম) সূত্রের খবর, বিমানবাবু চেয়ারম্যান থাকবেন না অন্য কেউ হবেন, তা আগামী মাসে দলের পার্টি কংগ্রেস হওয়া পর্যন্ত ঝুলে রইল। বিমানবাবু নিজেও পদে থাকার জন্য তাঁকে কোনও ‘বিশেষ আমন্ত্রিত সদস্য’র তালিকায় রেখে কেন্দ্রীয় কমিটি তৈরি হোক চান না। সেকথা তিনি সীতারাম ইয়েচুরি, প্রকাশ কারাটদের জানিয়েও দিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, সম্পাদক পদে বিদায় ঘটছে সূর্যকান্তের। সম্পাদক করা হবে শ্রীদীপ ভট্টাচার্যকে। এমনটাই ঠিক ছিল। কিন্তু পারিপার্শ্বিকি পরিস্থিতি এবং দলেরই নিচুতলার মনোভাব এই ভাবনা থেকে কিছুটা আলাদা থাকায় শীর্ষ নেতৃত্ব সিদ্ধান্ত বদল করে। শেষ লগ্নে শ্রীদীপ ভট্টাচার্যকে পিছনে ফেলে সিপিআইএমের রাজ্য সম্পাদকের ব্যাটন যায় পলিটব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিমের হাতে।
এদিকে, ফ্রন্টের শরিক দলগুলি বিমানবাবুকে এই পদে দেখতে চায়। তাঁদের মতে, যে কঠিন পরিস্থিতি বামফ্রন্টকে মোকাবিলা করতে হচ্ছে, সেখানে বিমানবাবুর অভিজ্ঞতা ও কৌশলের বিকল্প নেই। সিপিআই(এম)-র রাজ্য সম্মেলন শেষ হওয়ার পরেই আজ বামফ্রন্টের বৈঠক ডাকা হয়েছে। ওই বৈঠকের খবর দিতে দোলের দিন শরিক নেতাদের ফোন করেন বিমানবাবুই।
সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে, একাধিক শরিক নেতা বিমানবাবুকে জানিয়েছেন যে, বয়স হয়েছে বলে ফ্রন্টের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব থেকে তাঁর সরে যাওয়া কেউই চান না। যখনই ফ্রন্টের অন্দরে সিপিআই(এম)-র সঙ্গে শরিকদের মত পার্থক্য হয়েছে, সেই পরিস্থিতি দক্ষতার সঙ্গে সামলেছেন বিমানবাবুই। এক শরিক নেতার কথায়, ‘বামফ্রন্টে বিমানদা অভিভাবকের মতো। তিনি নিজে থেকে অন্য কাউকে এই দায়িত্বের জন্য তৈরি করে গেলে সেটাই ঠিক পদ্ধতি হবে। হঠাৎ সরে গেলে বামফ্রন্ট পরিচালনায় ধাক্কা লাগবে!’
বয়স-নীতি মেনে যাঁরা পদ বা কমিটি সরে গেলেন, তাঁদের নিয়ে দলের কী পরিকল্পনা? এই নিয়ে রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমও বলেছেন, ‘দলের কেন্দ্রীয় থেকে জেলা কমিটি পর্যন্ত এই বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। যাঁরা অব্যাহতি নিলেন, তাঁরা কমিটি থেকে সরে গিয়েছেন, পার্টি থেকে নয়। বিমানদা, সূর্যদা’র মতো নেতাদের অভিজ্ঞতা, দক্ষতাকে দলের কাজে লাগানো হবে।'
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন