পূর্ব মেদিনীপুর জেলার নন্দকুমার ব্লকের বহরমপুর সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির নির্বাচনে ৬৩টি আসনেই জয়লাভ করেছে বাম এবং প্রগতিশীল জোটের প্রার্থীরা। তবে, রবিবার রাতে নির্বাচনের ফল ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। তৃণমূলের দাবি, বাম এবং বিজেপি একজোট হয়ে এই সাফল্য পেয়েছে। পাল্টা প্রতিবাদে সরব হয়েছে বামেরা।
তৃণমূল এবং বিজেপির মন্তব্যের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা জানিয়ে একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছে পশ্চিমবঙ্গ সমবায় বাঁচাও মঞ্চ। বিবৃতিতে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে - সমবায় সমিতির নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে অসত্য এবং ঘৃণ্য প্রচার চালাচ্ছে তৃণমূল, বিজেপি ও সংবাদমাধ্যমের একাংশ। ঘোলা জলে মাছ ধরার মত বিজেপি কিছু জয়ী প্রার্থীকে নিজেদের বলে প্রচার করছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সমবায় বাঁচাও মঞ্চ বামপন্থীদের সংগঠন হওয়া সত্ত্বেও বিজেপি সেটাকে নিজেদের সংগঠন বলে চালাতে চাইছে। এই মঞ্চ সর্বদা রাজ্যের বামপন্থী, প্রগতিশীল এবং গণতান্ত্রিক মনোভাব নিয়ে চলে। রাজ্যের প্রতিটি সমবায় সমিতিগুলিকে দখল, লুটপাট ও ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করতে এই মঞ্চ গড়ে তোলা হয়েছে।
সমবায় সমিতিকে ধ্বংস করার পিছনে কেন্দ্রের মোদী সরকার এবং রাজ্যের তৃণমূল সরকার উভয়কেই দায়ী করেছে সমবায় মঞ্চ। তাদের কথায় - সচেতন নাগরিকদের কাছে একটা বিষয় স্পষ্ট, সমগ্র সমবায় ব্যবস্থাকে শেষ করে ফেলার জন্য কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, শুভেন্দু অধিকারী এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী উভয়েই দায়ী। তাঁরা সমবায়ের নির্বাচিত পরিচালন কমিটির পরিবর্তে তৃণমূল বা বিজেপির মনোনীত লোকজন দিয়ে পরিচালন বোর্ড গঠন করছে।
প্রসঙ্গত, গত নির্বাচনেও জয়ী হয়েছিল বামপন্থী ও প্রগতিশীল জোট। এইবারের নির্বাচনে সবকটি আসনে তারা প্রার্থী দিতে পারলেও ৩৫টি আসনে প্রার্থী প্রত্যাহার করে নেয় তৃণমূল। ফলে আগেই ৫২টি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয় বাম ও প্রগতিশীল জোট। বাকি ১১টি আসনে নির্বাচন হয় রবিবার। সেখানেও সবকটিতে জয়লাভ করে জোট।
এ প্রসঙ্গে সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেন - পঞ্চায়েত নির্বাচন যত এগিয়ে আসবে, ততই মিডিয়াকে দিয়ে 'রাম বাম একসঙ্গে' বলে মিথ্যা প্রচার চালানো হবে। আসলে তৃণমূলের যে নেতারা বিজেপিতে গিয়েছিলেন, তাঁরা তৃণমূলে ফিরে এলেও সাধারণ মানুষ নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে লালে ফিরছে।
তিনি আরও জানান, এটা কোনও দলীয় নির্বাচন নয়। নন্দকুমারে ৩০০ ভোটারের কাছে সমবায়কে দুর্নীতিগ্রস্ত তৃণমূলীদের হাত থেকে বাঁচানোই ছিল মূল লক্ষ্য। তাঁরা চোরেদের বিরুদ্ধে একজোট হয়ে লুটেরাদের পরাজিত করেছেন। তৃণমূল তো সর্বত্র সমবায়কে ধ্বংস করে দিচ্ছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন