একবিংশ শতাব্দীতে দাঁড়িয়েও এই ধরনের ঘটনা বোধহয় সত্যি সত্যি মধ্যযুগীয় বর্বরতা। ভিন্ন ধর্মের প্রেমের সম্পর্ক এক তরুণ ও কিশোরীর। কিন্তু তা কি হতে পারে? মানতে না পেরে যুগলের চুল কেটে দেওয়া হল। ঘটনাটি ঘটাল স্বয়ং প্রাক্তন বিজেপি নেত্রী। এক সময়ে তিনি নিজেকে বিজেপি নেত্রী হিসাবে পরিচয় দিতেন, এখন ‘সমাজসেবী’ হিসেবে নিজের পরিচয় দেন। এই ঘটনায় স্বাভাবিক ভাবেই গোটা রাজ্যে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে কৃষ্ণনগরের গোয়ারিবাজার এলাকায়। প্রশ্ন উঠেছে, প্রাক্তন বিজেপি নেত্রীর নীতিপুলিশি নিয়েও। জানা গিয়েছে, গোয়ারিবাজার এলাকায় এক যুগল গত বুধবার ঘোরাফেরা করছিল। তাদের বাধা দেন প্রাক্তন বিজেপি নেত্রী বাবলি মুখোপাধ্যায়। কারণ, করিমপুরের বাসিন্দা ওই তরুণ মুসলিম ও কিশোরী হিন্দু পরিবারের সন্তান। ভিনধর্মের প্রেমেই আপত্তি প্রকাশ করেই তিনি তাঁদের বাধা দেন। কিন্তু কথা শুনতে চায়নি ওই যুগল।
অভিযোগ, কথা না শোনায় ক্ষুব্ধ হয়ে ওই নেত্রী তাঁদের হেনস্তা করেন। প্রকাশ্যে তাঁদের চুল কেটে দেন। তবে সাহস করে ওই যুগল কাউকে কিছু জানাতে পারেননি। তাঁরা বাড়ি ফিরে যান। নিজের আস্ফালন জাহির করতে গিয়ে নিজেই যুগলকে মারধরের ছবি ও ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেন বাবলি মুখোপাধ্যায়। তাতেই বিপাকে পড়েছেন ওই নেত্রী। সেই ছবি, ভিডিও দেখে নড়েচড়ে বসে পুলিশ।
স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করে কোতয়ালি থানার পুলিশ বাবলিকে গ্রেফতার করে। ধৃতের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৪১, ৩২৩, ৩৫৪, ১৫৩এ, ৫০০, ৫০৫(১), ৫০৯ এবং ৩৪ ধারায় মামলা রুজু করে আদালতে তোলা হয়। শুক্রবার তাঁকে কৃষ্ণনগর আদালতে হাজির করানো হলে সাত দিন জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন