দুর্গা প্রতিমা বিসর্জন করতে এসে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটল মালবাজারের মাল নদীতে। হড়পা বানে আপাতত ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিখোঁজ প্রায় ৩০ জন। তবে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। প্রশাসনিক গাফিলতি থাকায় পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান আহত ও নিহতদের পরিবারের সদস্যরা।
বিজয়া দশমীর দিন এমন দুর্ঘটনা ঘটবে সেটা কেউ আন্দাজ করতে পারেননি। জলপাইগুড়িতে বুধবার সন্ধ্যে বিসর্জন দেখতে ভিড় করেন বহু মানুষ। বলা যেতে পারে আট থেকে আশি সকলেই উপস্থিত ছিলেন। বিসর্জন চলাকালীনই ঘটে বিপত্তি। মাল নদীতে হরপা বানের জেরে জলের স্রোতে তলিয়ে যান একাধিক দর্শনার্থী। পুলিশ সূত্রে খবর, এখনও পর্যন্ত ৮ জনের মৃতের খবর পাওয়া গেছে। নিহতদের মধ্যে ৪ জন মহিলাও আছেন। তবে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে। ২০-৩০টি প্রতিমা নিরঞ্জনের পরেই দুর্ঘটনাটি ঘটে।
পুলিশের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ হয়ে বৃহস্পতিবার সকালে মালবাজারের ক্যালটেক্স মোড়ে পথ অবরোধ করেন আহত ও নিহতদের পরিবারের সদস্যরা। তাঁদের অভিযোগ, আগাম সতর্কতা না থাকায় এমন হয়েছে। উদ্ধারকার্যে পুলিশের তরফ থেকে কোনো সাহায্য মেলেনি। হাজার হাজার দর্শকের সমাগম হবে জেনেও এই ধরণের গাফিলতি কাম্য নয়।
প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, পুলিশ থাকলেও পর্যাপ্ত পরিমাণে ছিল না। তাছাড়া তাদের অভিযোগ বিপর্যয় মোকাবিলা দলের কাছে দড়ি ছাড়া কিছুই ছিল না। নৌকা পর্যন্ত ছিল না। এত ভিড় হবে জানা সত্ত্বেও কীভাবে প্রশাসনের এমন গাফিলতি হতে পারে। কেউ কেউ বলছেন, পুলিশের থেকে সাধারণ মানুষ এগিয়ে আসে সাহায্যের জন্য। যাঁদেরকে উদ্ধার করা হয়েছে সকলকেই স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। রাতে সেই হাসপাতালে চিকিৎসার গাফিলতির অভিযোগে ভাঙচুরও করা হয়। পরে বিশাল পুলিশ বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এই প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী ট্যুইটার হ্যান্ডেলে লেখেন, পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়িতে দুর্গাপুজোর বিসর্জনে যে ঘটনা ঘটেছে তা সত্যিই বেদনাদায়ক। স্বজনহারাদের প্রতি আমার সমবেদনা জানাই। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী ও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মৃতদের পরিবারকে ২ লাখ টাকা ও আহতদের জন্য ৫০ হাজার টাকার ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছেন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন