প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘটলে সরকারের পক্ষ থেকে ত্রাণ দেওয়াটাই দস্তুর। কিন্তু এই ত্রাণ বিলি নিয়ে নানা সময়ে দুর্নীতির ভুরিভুরি অভিযোগ উঠেছে। সেখানে বারবার অভিযোগের তীর উঠেছে তৃণমূলের দিকে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মাঠে নামতে হয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে।
যতই দাওয়াই দেওয়ার চেষ্টা করুন না কেন, তা যে পুরোপুরি কাজে দেয়নি, তাই ফের প্রমাণিত হল মালদার পঞ্চায়েত প্রধান সোনামণি সাহার কর্মকাণ্ডে। গত ২০১৭ সালে ভয়াবহ বন্যা হয় মালদায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ত্রাণ বিলির ব্যবস্থা করা হয়। ওই পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে সেই ত্রাণ লুটের অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ, ত্রাণের ৭৬ লক্ষ টাকা নিয়ে বেপাত্তা তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধান। গত দুমাস ধরে তিনি ফেরার। এবার তাঁর নামে হুলিয়া জারি করেছে আদালত। একমাসের মধ্যে প্রধান ধরা না দিলে তার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার মতো প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ৭০ হাজার এবং আংশিক ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ৩৩০০ টাকা ঘোষণা করে সরকার। তবে ক্ষতিগ্রস্তদের অনেকেরই অভিযোগ, তালিকায় নাম থাকলেও মেলেনি ত্রাণের টাকা। শুধু পঞ্চায়েত প্রধান নন। একই অভিযোগে দুর্নীতির তালিকায় আছেন অনেকেই। একই অভিযোগ হরিশচন্দ্রপুর-১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কোয়েল দাস ও আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে। খোঁজ মিলছে না এঁদেরও।
চার বছর ধরে এই দুর্নীতি নিয়ে বিশেষ কোনও উদ্যোগ নেয়নি প্রশাসন। কংগ্রেস নেতা আব্দুল মান্নান আদালতে মামলা করলে প্রশাসন নড়েচড়ে বসতে বাধ্য হয়। অভিযোগ, তালিকায় রয়েছে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের নাম। অ্যাকাউন্ট নম্বর হিসেবে তাদের ব্যাংক একাউন্টের নম্বর থাকার কথা। কিন্তু প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের ব্যাংক একাউন্টের বদলে তৃণমূল নেতা নম্বর দেওয়া হয়েছে। ফলে ক্ষতিগ্রস্তদের উদ্দেশ্যে বরাদ্দের টাকা বিলি হয়েছে ঠিক কথাই। কিন্তু সেটা পৌঁছে গিয়েছে তৃণমূল নেতাদের কাছে। এভাবেই টাকা পাচার করা হয়েছে বলে অভিযোগ।
এই পরিস্থিতিতে বন্যাত্রাণ দুর্নীতি মামলায় আদালতে মুখ পুড়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের। ওই মামলায় ক্যাগকে তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে আদালতে রিপোর্ট পেশ করতে হবে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন