গোরু পাচারকাণ্ডে ইতিমধ্যেই সিবিআই হেফাজতে রয়েছেন বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা নাগাদ তাঁকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। সে বিষয়ে ফের সরব হলেন সিপিআই(এম) নেতৃত্ব।
অনুব্রতর গ্রেফতারি প্রসঙ্গে মমতা ব্যানার্জীর বিবৃতি দাবি করে সিপিআই(এম) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী জানান, "বাড়ি থেকে কার্যত ঘাড় ধরে দোর্দণ্ডপ্রতাপ মাফিয়া অনুব্রত মণ্ডলকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। কেন ওই অবস্থা তৈরি হল? দশবার বারোবার সিবিআই ডাকছে আর উনি এড়িয়ে যাচ্ছেন। প্রশাসনিক ক্ষমতা ব্যবহার করে ডাক্তারকে দিয়ে ভুল লেখালেন। তাতেও ধরা পড়ে গেলেন। লাজ লজ্জা নেই কিছু! উনি যখন চড়াম চড়াম ঢাক বাজাবার কথা বলেছেন তখন মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্রয় দিয়েছেন।"
সুজন বাবুর কথায়, "উনি যখন পুলিশকে বোমা মারার কথা বলেছেন তখন মুখ্যমন্ত্রী কার্যত সার্টিফিকেট দিয়েছেন। বহু জেলার জেলা সভাপতি বদল হয়েছে। উনি বদল হননি। ম্যাড়া লড়ে খুঁটির জোরে। অনুব্রত মণ্ডল মার্কা ম্যাড়া খুঁটির জোরে লড়ছে। খুঁটি মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। তিনি কোথায়? তিনি কী বলবেন? অবিলম্বে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিবৃতি দেওয়া উচিত।"
অন্যদিকে অনুব্রতর গ্রেফতারি প্রসঙ্গে বিশিষ্ট আইনজীবী তথা সিপিআই(এম) সাংসদ বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য জানান, "অনুব্রত একা শুধু নন, তার পেছনে একটি বড় রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ও রাজনৈতিক চক্রান্ত রয়েছে। এই রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের যিনি মাথা তাঁর দিকে হাত বাড়াতে হবে। কেলেঙ্কারির মক্ষীরানী হলেন মুখ্যমন্ত্রী। তদন্ত যদি ঠিক পথে যায় তাহলে মুখ্যমন্ত্রীকে গ্রেফতার করতে হবে।"
পাশাপাশি সিবিআই-র ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি জানান, "এটা সিবিআই-র অনেক আগেই করা উচিত ছিল। অনেক দেরি করে ফেলেছে। এই তদন্তকারী সংস্থার বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছিল। তাদের সেই বিশ্বাসযোগ্যতা ফেরানোর জন্য গ্রেফতার করা হয়েছে। কিন্তু তা যেন লোক দেখানো না হয়ে যায়। সঠিক তদন্ত করে নির্দিষ্ট লক্ষ্যে যেন পৌঁছনো যায়। অনের দূর সিবিআইকে যেতে হবে। আইনের দিকে থেকে গ্রেফতার করা ছাড়া উপায় ছিল না।"
ইতিমধ্যেই পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং অনুব্রত মণ্ডলের মত দুই হেভিওয়েট তৃণমূল নেতার গ্রেফতারি নিয়ে যথেষ্ট অস্বস্তিতে আছে ঘাসফুল শিবির। এরই মাঝে বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের সামনে তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় জানান, "অনুব্রতকে সিবিআই ডাকছিল, কিন্তু শরীর খারাপের জন্য যেতে পারেনি। এখন গ্রেফতার করেছে বিষয়টি আইনে চলে গিয়েছে। তবে অনুব্রত ভাল সংগঠক ছিলেন আমাদের দলের। ওঁর বিরুদ্ধে ঠিক কী বক্তব্য সেটা আমরা এখনও জানি না। চার্জশিটে ওঁর নাম ছিল না। দল পরে এ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।"
এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, "পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিষয়ে যেমন আমরা লজ্জিত। অনুব্রতর বিষয়ে আমরা সেটা এখনই কিছু বলতে রাজি নই। এই বিষয়ে আরও তথ্য সামনে এলে বোঝা যাবে। সিবিআই যেমন আইন অনুসারে ডেকেছে, তেমন মানুষ সমন এড়াতেই পারে। মেডিকেল গ্রাউন্ডে ও চিঠি দিয়ে জানিয়েছে একাধিকবার। সেটা যদি গ্রেফতারের কারণ হয় হয়েছে। কিন্তু একটা অসুস্থ লোককে জোর করে এভাবে নিয়ে যাওয়াটা ঠিক নয়।"
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন