D.El.Ed পড়ুয়াদের থেকে ২৫ কোটি টাকা ঘুষ নিয়েছেন মানিক ভট্টাচার্য! - বিষ্ফোরক তথ্য ইডির

গড়ে প্রায় ২৫ জন পড়ুয়া নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে অনলাইনে আবেদন করতে না পারায় অফলাইনে ভর্তি হত। সেক্ষেত্রে তাঁদের সবাইকেই মাথা পিছু ৫ হাজার টাকা করে দিতে হত মানিক ভট্টাচার্যকে।
মানিক ভট্টাচার্য
মানিক ভট্টাচার্যগ্রাফিক্স - সুমিত্রা নন্দন
Published on

প্রাইমারি, আপার প্রাইমারি হোক অথবা এসএসসি, পেঁয়াজের খোসা ছাড়ানোর মতই দুর্নীতির একের পর চিত্র সামনে আসছে। ২০১৮-২০২১ পরপর তিনটি শিক্ষাবর্ষে রাজ্যের সরকারি ও বেসরকারি ডিএলএড কলেজগুলি থেকে প্রায় ২৫ কোটি টাকা বেআইনিভাবে তুলেছিলেন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অপসারিত সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য। এমনটাই জানিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি।

ইডির দাবি, তৃণমূল বিধায়ককে জেরা করে যে বিষয়গুলি উঠে এসেছে তাতে এটাই স্পষ্ট হচ্ছে, দুর্নীতির পাশাপাশি রাজ্যের ডিএলএড কলেজগুলি থেকে সম্পূর্ণ বেআইনি পথে পড়ুয়াদের থেকে রেজিস্ট্রেশনের সময় টাকা তুলতেন মানিক। আদালতে ইতিমধ্যেই সেইসব তথ্য পেশ করেছেন গোয়েন্দারা।

গোয়েন্দা আধিকারিকরা আরও জানান, সরকারি ও বেসরকারি মিলিয়ে রাজ্যের মোট ৬৪৯টি ডিএলএড রয়েছে। সেখানকার মোট আসন সংখ্যা ৪৭ হাজার ৭০০টি। কলেজ গুলিতে গড়ে যদি মোট ২৫ জন পড়ুয়া থাকে, তাহলে মোট সংখ্যা দাঁড়ায় ১৬ হাজার ২২৫ জন। তাঁদের প্রত্যেকের মাথা পিছু ৫ হাজার টাকা করে নেওয়া হত। অর্থাৎ, হিসেব দাঁড়াচ্ছে ৮ কোটি ১১ লক্ষেরও বেশি। এইসব টাকা যেত মানিক ভট্টাচার্যের কাছে।

বর্তমানে প্রাথমিক এবং উচ্চ প্রাথমিকে শিক্ষকতার চাকরি পেতে গেলে ডিএলএড ডিগ্রি থাকা বাধ্যতামূলক। সেই কারণেই ডিএলএড কলেজগুলিতে ভর্তির প্রবণতাও বেড়েছে।

ইডি সূত্রের খবর, যেসব পড়ুয়ারা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কলেজে ভর্তির জন্য অনলাইনে আবেদন করতে পারেনি, অফলাইনে অবৈধ উপায়ে মোটা টাকার বিনিময়ে তাঁদের রেজিস্ট্রেশন করানো হত। গড়ে প্রায় ২৫ জন পড়ুয়া নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে অনলাইনে আবেদন করতে না পারায় অফলাইনে ভর্তি গত। সেক্ষেত্রে তাঁদের সবাইকেই মাথা পিছু ৫ হাজার টাকা করে দিতে হত মানিক ভট্টাচার্যকে।

অন্যদিকে, নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ইডির আতশকাঁচের নীচে রয়েছে আরও এক মাথা। রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী জাকির হোসেনের প্রাক্তন আপ্ত সহায়ক দীপক দাস। ইনিও মানিক ভট্টাচার্যের যথেষ্ট ঘনিষ্ঠ বলেই দাবি কেন্দ্রীয় আধিকারিকদের। জাকির হোসেনের নামে থাকা একাধিক ডিএলএড কলেজ পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন দীপক। মূলত তাঁর মাধ্যমেই টেট নিয়োগের অবৈধ তালিকা যেত মানিকের কাছে।

সূত্র মোতাবেক জানা গেছে, বিড়ি ব্যবসায়ী জাকির হোসেনের কোচবিহারের মেখলিগঞ্জে পরেশ অধিকারীর সাথে যৌথ উদ্যোগে একটি কলেজ আছে। শীঘ্রই তাঁকে তলব করতে পারে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।

মানিক ভট্টাচার্য
মৃত ব্যক্তির সাথে জয়েন্ট অ্যাকাউন্ট মানিকের স্ত্রীর! সেখানে ৩ কোটি টাকা, একাধিক বিষ্ফোরক অভিযোগ ইডির

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in