যারা অধিক রোজগারের জন্য চাকরিবৃত্তি করেন তাঁদের থেকে মুড়ি, তেলেভাজা বিক্রেতাদের আমি বেশি সম্মান করি - হ্যাঁ, সোশ্যাল মিডিয়াতেও এমনই পোস্ট করেছেন তৃণমূল বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারি। তাঁর এই বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়া তোলপাড়।
তৃণমূল বিধায়কের কথায় - "যারা প্রচুর পড়াশোনা করে অধিক রোজগারের জন্য চাকরবৃত্তিকেই জীবনের পরমার্থ মনে করে তার চাইতে যে লোকটি স্বাধীন ভাবে চপ মুড়ি তেলে ভাজা বিক্রি করে সামান্য রোজগার করে সৎভাবে জীবন যাপন করে তার সন্মান অনেক বেশি বলে আমি মনে করি।"
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভূয়সী প্রশংসা করে তিনি বলেন, "এখন তো বাংলায় একজন মমতাময়ী দিদি আছেন। বিনামূল্যে রেশন দিচ্ছেন , লক্ষীর ভাণ্ডার দিচ্ছেন। সেকালে কেউ ছিলো না। তাই অভাব অনাহার ছিলো আমাদের নিত্য সঙ্গী।"
এই ধরণের মন্তব্যের জেরে ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় একাধিক বিদ্রূপ এবং কটাক্ষের শিকার হয়েছেন মনোরঞ্জন। পোস্টের কমেন্ট বক্সে কার্যত দীর্ঘদিনের জমা ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন সাধারণ মানুষ।
জনৈক এক ব্যক্তির কথায়, "শিরদাঁড়া বলে বস্তুটাকে যে বাঁচিয়ে রাখেননি সেটা বুঝতে পারছি, কিন্তু বিবেকটাও মেরে ফেলেছেন দেখে খারাপ লাগছে। ছিঃ! ছিঃ!"। অন্য আরেকজন বলেন, "আপনি তাহলে চোরদের সাথে এমএলএ না থেকে ইস্তফা দিয়ে ঘুগনি মুড়ি বিক্রি করে সম্মানের সৎ জীবন পালন করুন"। এইসব মন্তব্যের পাশাপাশি কমেন্ট বক্সে তৃণমূল বিধায়ককে 'চোর' বলেও কটাক্ষ করতে দেখা গেছে অনেককেই।
আরও এক ব্যক্তির কথায়, " এক জন স্বাধীন মানুষ অবশ্যই প্রথাগত পড়াশুনো শেষ করে নিজ ইচ্ছা অনুযায়ী পেশা নির্বাচন করতেই পারেন এবং সে নির্বাচনের তালিকায় চপের দোকান কেন একটি ছোট্ট বিড়ি সিগারেটের দোকান ও থাকতে পারে। এতে কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু রাজ্যের সরকার যদি কর্মসংস্থান এর ক্ষেত্র তৈরী করতে ব্যর্থ হয়ে সরকারের প্রধান পদাধিকারী যদি চপ বেগুনী ঘুগনি ইত্যাদি ব্যাবসার আইডিয়া দেন তাহলে অবশ্যই সমস্যার। কারণ তাহলে তিনি নিজের কাজটাই করছেন না।"
সম্প্রতি, খোদ তৃণমূল সুপ্রিমো দুর্গাপুজোর সময় বেকারদের চা, ঝালমুড়ি, ঘুঘনি ইত্যাদি বিক্রি করতে বলেছিলেন। এমনকি কাশফুল দিয়ে লেপ বানিয়ে ব্যবসা করার কথা শোনা গিয়েছিল তাঁর কথায়। এই ঘটনার পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্যকে পরোক্ষভাবে সমর্থন জানালেন মনোরঞ্জন। যা বিতর্কের আগুনে আরও ঘৃতাহুতি দিয়েছে। তবে বির্তকের জেরে আরও একটি পোস্টে সাফাইও দিয়েছেন তিনি।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন