করোনার ঊর্ধ্বমুখী গ্রাফ নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য আজ থেকে কঠোর বিধিনিষেধ লাগু করেছে রাজ্য সরকার। বেশ কিছুদিন কোভিড পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকলেও বছর শেষে তা বেড়ে গিয়েছে অনেকটাই। আগামী ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত জারি হওয়া নির্দেশিকায় শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান, পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ। ট্রেন ও বাস চলাচলেও সময় সীমিত হয়েছে। এছাড়াও কিছু বিধিনিষেধ লাগু করেছে। যদিও বন্ধ হয়নি গঙ্গাসাগর মেলা।
মেলা বন্ধের দাবিতে এবার হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলেন চিকিৎসক অভিনন্দন মণ্ডল। সোমবার হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে তিনি গঙ্গাসাগর মেলা বন্ধের আবেদন জানান। আগামী ৫ জানুয়ারি এই জনস্বার্থ মামলার শুনানি হওয়ার কথা। তাঁর দাবি, রাজ্য সরকার জানিয়েছে, এই মেলায় বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ আসেন। আর এই জনসমুদ্রে দূরত্ববিধি বা অন্য কোভিড প্রোটোকল মানা সম্ভব নয়।
গঙ্গাসাগর মেলা যদি চালু থাকে, একই পরিমাণ ভিড়ও হবে। আর তা থেকে গোষ্ঠী সংক্রমণ বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সেই পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার মতো পরিষেবা ব্যবস্থা না থাকার দরুন ভেঙে পড়তে পারে চিকিৎসা ব্যবস্থা। আক্রান্তের ক্রমবর্ধমান হার বজায় থাকলে এই বিপুল পরিমাণ মানুষকে চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হবে না। লাগাতার পরিষেবা দিতে গিয়ে চিকিৎসকদের আক্রান্ত হওয়ার হারও বাড়বে। তাই অভিনন্দনবাবুর আর্জি, অতিমারীর ভয়াবহতার কথা মাথায় রেখে এবারের মতো গঙ্গাসাগর মেলা বন্ধ রাখা হোক। প্রসঙ্গত, গত কয়েকদিনে চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মী মিলে বেশ কয়েকজন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত বছরও অতিমারী আবহে গঙ্গাসাগর মেলা বন্ধের আবেদন জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে একাধিক মামলা হয়। তখন হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণে ই-স্নানের বিষয়টি উঠে আসে। অর্থাৎ অনলাইনেই বুক করা যাচ্ছিল পবিত্র গঙ্গা জল। আর বাড়ি বসেই মিলে যাচ্ছিল তা। এবার জনস্বার্থ মামলা দায়ের হওয়ার পর হাইকোর্ট ফের ওই ব্যবস্থাকেই গুরুত্ব দেয় কি না, সেদিকে নজর থাকবে সবার। পাশাপাশি স্বল্প পরিসরে বা কোভিডবিধি মেনে মেলায় মেতে ওঠা সম্ভব কি না, সেটাই দেখার।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন