১০০ দিনের কাজ বা MGNREGA প্রকল্পে ভুয়ো কার্ডের রমরমা। গত এক বছরে পশ্চিমবঙ্গে ধরা পড়েছে প্রায় ১৫ লক্ষ ভুয়ো জব কার্ড! এগুলো সব বাতিল করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার, এই তথ্য জানিয়েছে রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামীণ উন্নয়ন বিভাগের অধীন, ১০০ দিনের প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা নোডাল বিভাগ।
সংশ্লিষ্ট দপ্তরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, 'চলতি অর্থ বছরে (২০২২-২৩) আজ পর্যন্ত রাজ্যে বাতিল হওয়া মোট ভুয়ো জব কার্ডের সঠিক পরিসংখ্যান হল ১৪ লক্ষ ১৭ হাজার ৫৫৭। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। আশা করা হচ্ছে, ২০২৩ সালের ৩১ মার্চ নাগাদ, এই সংখ্যাটি ১৫ লক্ষ ছাপিয়ে যাবে।'
জানা যাচ্ছে, গত চার মাস ধরে, রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামীণ উন্নয়ন দফতর রাজ্যের ভুয়ো জব কার্ড সনাক্ত এবং তা বাতিল করার জন্য একটি বিশেষ অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে।
এক কর্মকর্তা বলেন, 'সত্যিই এই অভিযান খুব কার্যকারী হয়েছে। এবং বাতিল হওয়া কার্ডের সংখ্যাও বেড়েছে। ভুয়ো জব কার্ড সনাক্তকরণ এবং বাতিলের পাশাপাশি, নতুন জব কার্ড প্রদানের প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখেছে দফতর। একই সময়ের মধ্যে, অসংখ্য পরিবারে প্রায় ২ লক্ষ ৫০ হাজার নতুন জব কার্ড ইস্যু করা হয়েছে।'
একই সঙ্গে তিনি জানান, যারা নতুন জব কার্ড পেয়েছেন, তাঁদের আধার কার্ডের সঙ্গে জব কার্ড এবং ব্যাঙ্ক আকাউন্ট লিঙ্ক করার জন্য অতিরিক্ত কর্মচারী নিয়োগ করা হয়েছে। যাতে, ১০০ দিনের কাজের মজুরি সরাসরি প্রকৃত ব্যক্তিদের ব্যাঙ্ক আকাউন্টে যেতে পারে। আর, এটি (আধার লিঙ্ক করা) বাধ্যতামূলক করেছে কেন্দ্রীয় সরকার ।
সম্প্রতি, পশ্চিম মেদিনীপুরে এক প্রশাসনিক সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে এই ইস্যুতে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি অভিযোগ করেন, 'গ্রামীণ মানুষের জীবনে সম্পূর্ণ অনলাইন ব্যবস্থা চালু করতে চায় কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু প্রান্তিক জনগোষ্ঠী কীভাবে এতে অভ্যস্ত হতে পারে? তাই, তাদের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠছে।'
তিনি বলেন, 'MGNREGA-এর অধীনে ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে অর্থ প্রদানের জন্য, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সাথে আধার কার্ড লিঙ্ক করা বাধ্যতামূলক করেছে কেন্দ্র। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার কি জানে, যে রাজ্যের বেশ কয়েকটি গ্রামীণ ব্লকে একটিও ব্যাঙ্কের শাখা নেই, সেখানকার লোকেরা কী করবে?'
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন