জনসংযোগ বাড়াতে গিয়ে আদিবাসীদের রোষের মুখে পড়লেন রাজ্যের অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। বৃহস্পতিবার পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর গ্রামের আদিবাসী মানুষজনদের সাথে দেখা করতে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তাঁকে দেখামাত্রই ঘিরে ধরে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ জানান গ্রামবাসীরা।
পঞ্চায়েত নির্বাচনকে সামনে রেখে জনসংযোগ বাড়াতে 'চলো গ্রামে যাই' নামক এক নতুন কর্মসূচীর উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল। কিন্তু সেই কর্মসূচীই যেন বুমেরাং হয়ে ফিরে এল ঘাসফুল শিবিরের কাছে। চন্দ্রিমাকে দেখে ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা এদিন স্পষ্ট জানান, তাঁদের জল নেই, রেশন কার্ড নেই। ঘরও পাননি তাঁরা। এইভাবে যে সাধারণ মানুষের রোষের মুখে পড়তে হবে তা ঘুণাক্ষরেও টের পাননি মন্ত্রী এবং তাঁর দলবল।
সূত্রের খবর, গতকাল জামালপুর থানার অন্তর্গত জৌগ্রাম আমড়ার এক অনুষ্ঠান বাড়িতে সভা ছিল চন্দ্রিমার। সভা শেষে NH-২-র বিপরীত দিকে ছোট্ট আদিবাসী গ্রাম খাগড়াগড়ে পৌঁছান তিনি। সাথে ছিলেন জামালপুরের তৃণমূল সভাধিপতি শম্পা ধারা।
আদিবাসীদের উদ্দেশ্যে চন্দ্রিমা বলেন, আপনারা সব ঠিকঠাক পাচ্ছেন তো? উত্তরে এক আদিবাসী মহিলা বলেন, 'কিছুই পাইনি। পরিবারের অনেকেরই রেশনকার্ড নেই।' এরপর তৃণমূল নেত্রী বলেন, নিশ্চয়ই দেরি করে জমা দিয়েছেন, তাই রেশন কার্ড হয়নি। পাল্টা আদিবাসী মহিলা জানান, ৩-৪ বছর আগে জমা দিয়েও রেশন কার্ড হয়নি। উত্তরে চন্দ্রিমা বলেন, দুয়ারে সরকারে যাননি? আদিবাসী মহিলার জবাব, অনেকবার জমা দিয়েছি দুয়ারে সরকারে, কার্ড মেলেনি।
স্থানীয় সূত্রের খবর, এই ঘটনার পর আর গ্রামের ভিতর যাননি স্বাস্থ্যমন্ত্রী। গাড়ি নিয়ে কলকাতার উদ্দেশ্যে বেরিয়ে গেছেন।
স্থানীয় বাসিন্দাদের স্পষ্ট অভিযোগ - রেশন কার্ড নেই, ঘরও পাইনি, দুয়ারে সরকারে বহুবার গিয়েও কাজ হয়নি। মন্ত্রীকে সেই কথা আমরা বলেছি। মন্ত্রী যে ভাল ভাল কথা বলছেন সেটা ভোট এসেছে বলে। অন্যান্য গ্রাম পঞ্চায়েতগুলির মত জৌগ্রাম এলাকাতেও প্রচুর চুরি, দুর্নীতি হয়েছে।
তাঁরা আরও জানান, ১০০ দিনের কাজের টাকা, সামাজিক উন্নয়নের টাকা, প্রধানমন্ত্রীর আবাস যোজনার টাকা থেকেও কাটমানি নিয়েছে তৃণমূল। তৃণমূলের চুরির কারণেই গ্রামে ১০০ দিনের কাজ বন্ধ হয়ে গেছে। কাজ না থাকায় এখানকার মানুষ অন্যরাজ্যে চলে যাচ্ছেন। যে সরকার ধান রোয়া বা ধান কাটার কাজ দিতে পারে না, তাদের মুখে উন্নয়নের কথা মানায় না।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন