একদিকে বিজেপির দাবি মুকুল রায়কে বিধায়ক পদ ছাড়তে হবে। অন্যদিকে, তাঁকে পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটি চেয়ারম্যান পদে বসাতে চলেছে তৃণমূল। সাধারণত এই পদটি দেওয়া হয়ে থাকে বিরোধী দলকে। কিন্তু শাসকদলের বিধায়কও এই পদ পেতে পারেন বিধানসভার নিয়ম অনুযায়ী। তবে মুকুল রায় বিধায়ক পদ ছাড়বেন কি না, সেটি পুরোপুরি নির্ভর করছে স্পিকারের সিদ্ধান্তের ওপর।
অতীতে দেখা গিয়েছে, বিরোধী দলের বিধায়ক শাসকদলে যোগ দিলেও খাতায়-কলমে তিনি বিরোধী দলেই রয়েছেন। তাই মুকুলের ক্ষেত্রেও এমনটা ঘটলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। বুধবার মুকুল রায় পিএসির সদস্য হওয়ার জন্য মনোনয়ন জমা দিয়েছেন।
এবারে বিধানসভা নির্বাচনে কৃষ্ণনগর উত্তর আসনে ৩৫ হাজারের বেশি ভোটে জয়লাভ করা মুকুল রায় ভোটের ফলাফল প্রকাশের মাসখানেক পর সপুত্র তৃণমূলে যোগদান করেন।
পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় ৪১টি কমিটি রয়েছে। তার মধ্যে ২৬টি স্ট্যান্ডিং কমিটি এবং ১৫টি অ্যাসেম্বলি কমিটি। নিয়ম অনুযায়ী, এই কমিটিগুলির মধ্যে পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটি-সহ চারটির সদস্য হন বিধায়কদের ভোটে নির্বাচিত কোনও বিধায়ক। তৃণমূল চাইছে, এই চারটি কমিটিই থাকুক তাদের হাতে।
নিয়ম অনুযায়ী, সেক্ষেত্রে এই কমিটিগুলিতে নির্বাচিত সদস্য হতে গেলে একজন প্রস্তাবক ও একজন প্রস্তাবের সমর্থক প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে এমন হতে পারে, মুকুলের নাম প্রস্তাব করলেন তৃণমূলের কোনও বিধায়ক। আর একইভাবে তৃণমূলের অপর কোনও বিধায়ক সেই প্রস্তাবকে সমর্থন করলেন।
সংসদীয় গণতন্ত্রের রীতি অনুযায়ী, অধ্যক্ষ স্বাভাবিকভাবে বিরোধীদল থেকেই পিএসি চেয়ারম্যান করে থাকেন। কারণ, পিএসির চেয়ারম্যান বিরোধীদলের না হলে সরকারি কাজে নজরদারি করা সম্ভব হয় না বলে মনে করা হয়। তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, পুরস্কার হিসেবে মুকুল রায়কে পিএসির চেয়ারম্যান পদে বসানো হবে।
অধ্যক্ষ জানিয়েছেন, আইন মেনে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সেই আইন মোতাবেক মুকুল রায়ের মনোনয়নে তৃণমূলের নয়, কিন্তু তৃণমূলের কথায় চলেন, এমন দুজন বিধায়ককে দিয়ে সই করানো হয়েছে। অর্থাৎ খাতায়-কলমে মুকুল রায়কে বিজেপি বা বিরোধী সদস্য হিসেবে দেখিয়ে পিএসি চেয়ারম্যান পদে বসানো হতে পারে।
শোনা যাচ্ছে, আগামী ২ জুলাই বিধানসভায় শুরু হতে চলা বাজেট অধিবেশনে পিএসি চেয়ারম্যানের নাম ঘোষণা করতে পারেন অধ্যক্ষ।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন