‘যশ' ঘূর্ণিঝড়ের পর প্রায় এক সপ্তাহ কেটে গিয়েছে। কিন্তু ঘূর্ণিঝড়ে তাণ্ডবের রেশ কাটেনি পূর্ব মেদিনীপুরের চণ্ডীপুর ব্লকের বিভিন্ন এলাকায়। মূলত কৃষিপ্রধান এই এলাকার ঘর, কৃষিজমি, পুকুর সব ভেসে গিয়েছে বৃষ্টির জলে। কারো বাড়ির একতলা সমান জল, কারওর বাড়ি পুরোটাই ভেসে গিয়েছে। প্রায় সব কাঁচা বাড়ি ভেঙে গিয়েছে। সবথেকে বেশি সমস্যা হয়েছে পানীয় জল নিয়ে। এর ওপর আছে সরকারি উদাসীনতা। এখনও এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য, সরকারি আধিকারিক বা শাসকদলের নেতা-কারওরই দেখা মেলেনি। এই দুর্দশাগ্রস্ত মানুষগুলির পাশে দাঁড়িয়েছে রেড ভলান্টিয়ার্স।
প্লাবিত মানুষদের উদ্ধার করে ত্রাণ শিবিরে পৌঁছে দিয়ে, থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন রেড ভলান্টিয়ার্স। প্রায় ৪৩২টি পরিবারকে রেড ভলান্টিয়ারদের উদ্যোগে শিক্ষক সংগঠন এবং শুভানুধ্যায়ী মানুষের আর্থিক সাহায্যে শুকনো খাবার, জল পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। বাড়ি-ঘর ভেসে গিয়েছে যাঁদের, তাঁদের থাকার জন্য ত্রিপল এবং আনুষঙ্গিক সামগ্রীর ব্যবস্থা করা হয়েছে। চণ্ডীপুর হাঁসচরা এলাকার এক বাসিন্দা জানান, নদীর জল প্লাবিত হওয়ার অন্যতম কারণ এখানকার খালগুলি নিয়মিত নিকাশি না হওয়া। দীর্ঘ আট-দশ বছরে নদী বাঁধগুলির কোনও দেখভালই করা হয়নি।
গত ২০০৮ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনে জেলা পরিষদ তৃণমূলের দখলে যায়। তারপর থেকে নদীর বাঁধ, খাল সংস্কারে বাধার সৃষ্টি হতে থাকে। জেলা পরিষদ উদ্যোগে না নেওয়া সেচ দফতর বা রাজ্য কোনও কাজ করতে পারেনি। যার ফলে ভুগতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। নদীর জল এলাকা থেকে বেরোতে পারছে না। নিকাশি ব্যবস্থা এখানকার প্রধান সমস্যা।
বাসিন্দাদের বক্তব্য, সরকার সঠিক সময়ে সবকিছু দেখভালের উদ্যোগ নিলে এভাবে নদীর জলে গ্রামের মানুষকে প্লাবিত হতে হত না। এই মানুষগুলোর এখন একমাত্র সহায় হয়ে উঠেছেন রেড ভলান্টিয়ার আশীষ গুছাইত, প্রীতম গায়েন, শেখ মনিরুল, বুদ্ধদেব সামন্ত, শশাঙ্ক গিরি, গৌতম জানা-সহ আরও অনেকে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন