সন্দেশখালিতে ধর্ষণ এবং যৌন নির্যাতনের অভিযোগ সাজানো। বৃহস্পতিবার এমনই দাবি করলেন সন্দেশখালির তিন স্থানীয় মহিলা। বৃহস্পতিবার সেই তিন ভিডিও প্রকাশ্যে এসেছে। (যদিও সেই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি পিপলস রিপোর্টার।)
গত শনিবার স্থানীয় বিজেপি নেতা গঙ্গাধর কয়ালের একটি স্টিং অপারেশনের ভিডিও প্রকাশ্যে আসে। গোপন ক্যামেরাবন্দী সেই ভিডিওতে বিজেপি নেতাকে বলতে শোনা গেছে, সন্দেশখালিতে মহিলাদের নির্যাতনের সমস্ত ঘটনা সাজানো। শুভেন্দু অধিকারীর নির্দেশে টাকা দিয়ে করানো হয়েছে।
আর তার পরেই বৃহস্পতিবার প্রকাশ্যে আসে আরও ভিডিও। যদিও সেগুলি গোপন ক্যামেরাবন্দী নয়। প্রকাশ্যে নিয়তি মাইতি, তপতী মাইতি এবং মিতা মাইতি নামে ওই তিন মহিলাই দাবি করছেন, সন্দেশখালির সমস্ত ঘটনাই পরিকল্পনামাফিক। তাদেরকে খুনের হুমকি দিয়ে সাদা কাগজে সই করিয়ে নেওয়া হয়েছিল।
ভাইরাল ওই ভিডিওতে নিয়তি জানিয়েছেন, মহিলা কমিশন যে দিন থানায় এসেছিল, সে দিন তাঁর মতো অনেককেই ডেকে নিয়ে গিয়েছিলেন বিজেপি নেত্রী পিয়ালি দাস ওরফে মাম্পি। তিনি বলেন, “তোমাদের কী অভিযোগ আছে বলো’। আমি বলেছিলাম, আমার জব কার্ডের (মনরেগা) টাকা পাইনি, রান্নার টাকা পাইনি, টাকাটা যেন পাই। আর কোনও অভিযোগ নেই।“ নিয়তির মন্তব্য, “ধর্ষণ-টর্ষণ কেউ করেনি আমাদের। মাম্পি আমাদের ফাঁসিয়ে দিয়েছে সাদা কাগজে সই করিয়ে।“
তপতী অভিযোগ করেন তাঁর খুড়শাশুড়ি মিতাকেও একই ভাবে থানায় নিয়ে গিয়ে সাদা কাগজে সই করানো হয়েছিল। তপতীর অভিযোগ, “সাত দিন পরে পুলিশ যখন যায় নোটিস নিয়ে, তখনই আমরা জানতে পারি ধর্ষণের অভিযোগ করানো হয়েছে। কিন্তু তেমন কিছুই ঘটেনি।“ এরপরেই তাঁর অভিযোগ, বিজেপি নেত্রী মাম্পি বহিরাগত। তিনি সন্দেশখালির ভোটার নয়।
মিতা জানান, “চার-পাঁচ দিন পরে থানার নোটিস আসার পরে জানতে পারলাম আমি নাকি ধর্ষণের অভিযোগ করেছি! কিন্তু আমাদের সঙ্গে তেমন কিছু ঘটেইনি। আমরা জানতামই না আমাদের নাম করে মিথ্যা মামলা করা হয়েছে। আমাদের অবমাননা করা হয়েছে। মাম্পির শাস্তি চাই।“ মিতার অভিযোগ, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে চাওয়ায় বিজেপি নেত্রী মাম্পি এবং তাঁর সঙ্গীরা তাঁকে ‘খুনের হুমকি’ও দিয়েছেন। তিনি বলেন, “তাই আমি থানায় আবার অভিযোগ জানিয়েছি।“
মাম্পি দাসকে এই বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য তলব করেছে পুলিশ।
পাশাপাশি, বৃহস্পতিবার সন্দেশখালি ঘটনার আরও একটি ভিডিও প্রকাশ্যে আসে। যেখানে বসিরহাটের বিজেপি প্রার্থী রেখা পাত্র, মাম্পি দাস সহ বেশ কয়েকজন মহিলা দিল্লিতে গিয়ে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সঙ্গে দেখা করা সন্দেশখালির নির্যাতিতাদের পরিচয় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। (যদিও সেই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি পিপলস রিপোর্টার।)
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন