আগামী শনিবার ষষ্ঠ দফায় নির্বাচন তমলুকে। আর তার আগে উত্তপ্ত এই লোকসভার অধীনস্থ নন্দীগ্রাম। এক মহিলা বিজেপি কর্মীকে কুপিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। এই হামলায় বিজেপির আরও কর্মী-সমর্থকেরা আক্রান্ত হয়েছেন। এঁদের মধ্যে একজনের অবস্থা সঙ্কটজনক হওয়ায় তাঁকে কলকাতায় স্থানান্তরিত করা হয়েছে। ভোটের আবহে এই ঘটনায় উত্তপ্ত নন্দীগ্রাম।
স্থানীয় সূত্রে খবর, ভোট প্রচারের শেষলগ্নে বুধবার রাতে সোনাচূড়ার মনসাপুকুর বাজার এলাকায় রাতে পাহারা দিচ্ছিলেন বিজেপির কর্মী-সমর্থকেরা। সেই সময় বাইকে করে আসা একদল দুষ্কৃতী তাঁদের উপর হামলা চালায়। তারপরেই ওই বিজেপির মহিলা কর্মী রথিবালা আড়িকে লক্ষ্য করে এলোপাথাড়ি কোপ চালাতে থাকে দুষ্কৃতীরা। যার ফলে রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন ওই মহিলা।
স্থানীয় সূত্রে আরও জানা যায়, মাকে বাঁচাতে গিয়ে গুরুতর জখম হন তাঁর ছেলে সঞ্জয় আড়িও। চিৎকার শুনে গ্রামবাসীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছলে দুষ্কৃতীরা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। এই ঘটনায় বিজেপির আরও প্রায় ৭ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। তড়িঘড়ি আহতদের নিয়ে নন্দীগ্রাম সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে নিয়ে যান স্থানীয়েরা। চিকিৎসকেরা রথিবালাকে মৃত বলে ঘোষণা করে।
অন্যদিকে, রথিবালার পুত্রের অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে কলকাতায় স্থানান্তরিত করা হয়েছে। এ ছাড়াও এই ঘটনায় জখম আরও প্রায় ৭ জন বিজেপি কর্মীর নন্দীগ্রাম হাসপাতালেই চিকিৎসা চলছে বলে খবর।
এই ঘটনায় বুধবার রাত থেকেই উত্তপ্ত নন্দীগ্রাম এলাকা। সকালে সেই উত্তাপ আরও বৃদ্ধি পায়। অভিযোগের তীর রাজ্যের শাসক দলের দিকে। তৃণমূলের বিরুদ্ধে সরব হয়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন বিজেপির নেতা-কর্মীরা। মনসাপুকুর বাজার সহ একাধিক জায়গায় গাছ ফেলে পথ অবরোধ করেছেন তারা। একের পর এক দোকান ও খড়ের গাদায় আগুন লাগান হয়েছে।
এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে বিশাল পুলিশ বাহিনী এবং কেন্দ্রীয় বাহিনী। লাঠিচার্জ করে উপস্থিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করে পুলিশ। চলছে টহলদারি। এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় ২ জনকে আটক করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বৃহস্পতিবার সকালে নিজের এক্স হ্যান্ডেলে পোষ্ট করে লেখেন, “গতকাল ভাইপো নন্দীগ্রামে যে উস্কানি দিয়ে গেছে তার প্রত্যক্ষ পরিণাম হচ্ছে এই রক্তপাত। পরাজয় নিশ্চিত বুঝে এই বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে তৃণমূল। একজন মহিলা কে কুপিয়ে খুন করতে এই জিহাদিদের হাত কাঁপে না।“
যদিও এই ঘটনার দায় অস্বীকার করেছে তৃণমূল। তাঁদের দাবি, বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফলেই এই হামলা।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন