আর জি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে একাধিক দুর্গা পুজা কমিটি সরকারি অনুদান ফিরিয়ে দিয়েছে। উৎসব না করার আহ্বান জানিয়েছে নাগরিক সমাজের একাংশ। এই আবহে আরও জাঁকজমক পূর্ণ উৎসবের ডাক দিলেন উত্তর ২৪ পরগণার অশোকনগরের তৃণমূল বিধায়ক তথা জেলা পরিষদের সভাধিপতি নারায়ণ গোস্বামী। বিধায়ক বলেন, “যাঁরা বলছেন উৎসবে নেই, আমাদের চ্যালেঞ্জ আরও ভালো করে উৎসব করে তাঁদের দেখিয়ে দেওয়া।“ তৃণমূল বিধায়কের এহেন মন্তব্যের পর তাঁকে নিশানা করেছেন বিরোধীরা।
মঙ্গলবার উত্তর ২৪ পরগণার মধ্যমগ্রামে পুজো-বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি নারায়ণ গোস্বামী। সেই বৈঠক থেকে বিধায়ক মন্তব্য করেন, “যাঁরা বলছে উৎসবে আমরা নেই, আমাদের চ্যালেঞ্জ হচ্ছে উৎসবটা জেলায় গত বছর যা হয়েছে তাঁর থেকেও ভালো করে, শৃঙ্খলা পরায়ণ ভাবে আরও ভালো করতে হবে। যেখানে খিচুড়ি ভোগ হতো না, ওখানে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। যেখানে বাউল গান হতো না, সেখানে একদিন বাউল গান দিতে হবে।“
বিধায়ক আরও বলেন, “এর জন্য একজন সভাধিপতি হয়ে যদি আমার কিছু করার থাকে, কমিটির কাছে আমার অনুরোধ, আমাকে বলবেন আমি সব ধরণের সাহায্য করতে রাজি আছি। গত বছর যা হয়েছিল, তার থেকে এ বছর বেশী হবে। আমরাও বাংলার বুকে প্রমাণ করতে চায়, আমরা উৎসবে আছি।“
আর জি কর কাণ্ডের বিচার চেয়ে টানা ৪২ দিন ধরে কর্মবিরতি পালন করে সদ্য কাজে ফিরেছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করেছে নাগরিক সমাজ। এখনও জারি রয়েছে প্রতিবাদ। এই আবহে বিধায়কের এহেন মন্তব্যের পর থেকে তাঁকে নিশানা করতে শুরু করেছেন বিরোধীরা।
এবিষয়ে সিপিআইএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, “মানিক ভট্টাচার্য জামিন পেয়েছে, বীরভূমের বাঘ (অনুব্রত মণ্ডল) জামিন পেয়েছে, উৎসবের এটাই তো প্রকৃষ্ট সময়। তৃণমূল ধ্বংসের উৎসবে বাংলার সর্বনাশ করছে। গোটা বাংলার মানুষ বুঝছেন যে সর্বনাশ হয়ে যাচ্ছে বাংলার। শিক্ষাক্ষেত্র ধ্বংস, স্বাস্থ্যক্ষেত্র ধ্বংস, নীতি মূল্যবোধকে ভাঙ্গা হচ্ছে প্রতিদিন। যুবক রোজ রাস্তায়, গতকালও আক্রান্ত হয়েছে, পরশুও আক্রান্ত হয়েছে। এটাই উৎসবের আসল সময়। নারায়ণ গোস্বামী নিজের পুরোপুরি ফাণ্ড ব্যবহার করবেন উৎসবের জন্য।“
অন্যদিকে, এবিষয়ে বিজেপি নেতা সজল ঘোষ তৃণমূল বিধায়ককে কটাক্ষ করে বলেন, “নামে নারায়ণ থাকলেই তো আর দেবতা হওয়া যায় না। যাঁরা উৎসবে নেই বলেছে, তারা কত বেদনার সাথে কত যন্ত্রণার সাথে বলছে, সেটা অনুভব করার মতন বাস্তবতা, বুদ্ধি, মানসিকতা এঁদের মধ্যে নেই। আরও বেশী করে উৎসব করতে হবে মানে এবারে মদের বিক্রি আরও বেশী হওয়া চাই। এই সব লোকের কথা নিয়ে কথা বলতে যাওয়াটা একটা মুর্খামির পরিচয়।“
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন