ভয়াবহ দূষণের জেরে অক্সিজেনের মাত্রা কমে গিয়েছে। ফলে রবীন্দ্র সরোবরের জলে মাছের মড়ক লেগেছে। তার উপর রয়েছে ঢাকুরিয়া লেকের পরিবেশ সংরক্ষণ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আদেশ। আর সেই আদেশ অমান্য করে ছটপুজো হলে জলদূষণ বাড়বে বই কমবে না। ফলে উদ্যোগী হয়েছে কেএমডিএ।
দূষণ বাড়লে সরোবরের জলজ প্রাণী বাঁচার সম্ভাবনাও থাকবে না। তাই কেএমডিএর সিদ্ধান্ত, এবারও রবীন্দ্র এবং সুভাষ সরোবরে হবে না ছটপুজো। তবে ছট পুজো উপলক্ষে কিছু ব্যবস্থা করেছে পুরসভা ও কেএমডিএ।
আগামী ১০ ও ১১ নভেম্বর গঙ্গার ঘাটগুলিতে আলোর ব্যবস্থা করার পাশাপাশি প্রত্যেকটি জলাশয়ে স্নান ও পুজোর পর ব্রতপালনকারীদের পোশাক পরিবর্তনের যাবতীয় ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। বিকল্প জলাশয়ের জন্য ছটপুজোর পুণ্যার্থীরা থাকেন, এমন এলাকায় পুরসভার হোর্ডিং ও পোস্টার দিয়ে প্রচার করা হয়েছে। উদ্দেশ্য, ব্রত পালন করতে যাতে প্রায়ই বছরের মতো রবীন্দ্র সরোবরে না যান।
প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য তথা বিধায়ক দেবাশিস কুমার জানান, গঙ্গার ৩৭টি ঘাট এবং যোধপুর পার্ক, পোদ্দারনগর, আনন্দপুর ও পাটুলি মিলিয়ে মোট ১৭০টি ঘাট ছটপুজোর জন্য প্রস্তুত হয়েছে। শীর্ষ আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও গতবার পুলিশের সামনেই মিছিল করে সরোবরে ছটপুজো হয়।
কেএমডিএর সাফাই ছিল, পুলিশ ধর্মীয় আবেগের কথা মাথায় রেখে উপস্থিতদের ওপর লাঠিচার্জ করেনি, বাধাও দেয়নি। তবে ঢাকুরিয়া লেক নিয়ে আন্দোলন করা পরিবেশবিদদের অভিযোগ, সরোবরের ধারে যে পাঁচতারা ক্লাবগুলি আছে, সেগুলি থেকে যে দূষিত বর্জ্য ও রাসায়নিক নিষ্কাশন হয়, তার একটা বড় অংশ প্রতিদিনই জলে মিশছে। ফলে জলের অম্লত্ব বৃদ্ধি পাচ্ছে। অক্সিজেনের মাত্রা কমছে। মাছের মৃত্যু হচ্ছে। মড়ক লেগেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কেএমডিএ ‘এরেটর’ বসিয়ে অক্সিজেনের মাত্রা বাড়িয়ে মড়ক রোখার চেষ্টা করছে।
ইতিমধ্যেই রাজ্যের বিশিষ্ট পরিবেশবিদ ও আইনজীবী সুভাষ দত্ত ঢাকুরিয়ার রবীন্দ্র সরোবর পরিদর্শন করে শনিবার সরোবর দূষণের ২৭টি বিপজ্জনক ক্ষেত্র চিহ্নিত করেছেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন মামলাকারী পরিবেশকর্মী সুমিতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী সপ্তাহে সুপ্রিম কোর্টে সরোবরের পরিবেশ সংক্রান্ত মামলার শুনানি আছে। তখন ওই ক্ষেত্রগুলির ছবি ও তথ্য দেবেন জমা দেবেন বলে জানান সুভাসবাবু।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন