বছর ঘুরলেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। তবে এবার তা এগিয়ে আসতে পারে। ঠিক এমনটাই ইঙ্গিত দিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী বছরের মে মাসে পঞ্চায়েত ভোট হওয়ার কথা।
নবান্ন সূত্রের খবর, পঞ্চায়েত নির্বাচন মে মাসে হলে সেই সময় যথেষ্ট গরম থাকবে। তাই এই গরমে সাধারণ মানুষকে কষ্ট দিতে চায় না রাজ্য সরকার। অন্যদিকে পঞ্চায়েত নির্বাচন এগিয়ে এলে মানুষের উপকারই হবে। উন্নয়নের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করা যাবে এবং মানুষ তাদের সমস্যাগুলি নিয়ে পঞ্চায়েতের দ্বারস্থ হতে পারবে।
এর আগে প্রতিটি কর্মীসভায় গিয়েই মুখ্যমন্ত্রী পঞ্চায়েতগুলির কাজকর্ম যত দ্রুত সম্ভব শেষ করার কথা বলেছিলেন। সূত্রের খবর, আগামী ৬ মাসের মধ্যে রাজ্যের প্রতিটি পঞ্চায়েতের কাজ দ্রুত শেষ করার নির্দেশ দিয়েছে মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। ২০২৩ সালের জানুয়ারীর মধ্যেই বাকি থাকা সব কাজ শেষ করতে চাইছে রাজ্য সরকার। জেলা সফরে গিয়ে রাজ্যের পঞ্চায়েত ভোট এগিয়ে আনার ইঙ্গিত দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার রাজ্যের মুখ্য সচিবের নির্দেশিকা জারি হওয়ার পর পঞ্চায়েত ভোট ঘিরে জল্পনা আরও বাড়ল। তবে কি এগিয়ে আসবে পঞ্চায়েত নির্বাচন?
ঠিক কী নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে? জানা গেছে যে, আগামী ৬ মাসের মধ্যে জল প্রকল্প থেকে শুরু করে গ্রামীণ রাস্তা তৈরীর কাজ সহ অন্যান্য যাবতীয় বকেয়া কাজগুলি দ্রুত শেষ করতে হবে। বসত বাড়ি এবং গ্রামীণ বাড়িগুলিতে সুলভ শৌচালয় তৈরীর কাজও এই ৬ মাসের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ১০০ দিনের কাজের গতি আনতে পঞ্চায়েতের গ্রামসভাগুলি ও পঞ্চায়েত কর্মীদের আরও সক্রিয় হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এর পাশাপাশি, বিভিন্ন এলাকাগুলির কাজ ঠিকমতো হচ্ছে কিনা তার খোঁজ নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বিডিওদের। যেহেতু একেকটি এলাকায় এক এক ধরণের কাজ থাকে। বিডিওদের সেটাই জানার চেষ্টা করতে বলা হয়েছে। এর সাথে পঞ্চায়েতগুলিকে বলা হয়েছে গ্রামসভা বসিয়ে সাধারণ মানুষের কাছে জানতে যে তাঁরা ঠিক কোন কাজগুলি আগে চাইছেন।
উল্লেখ্য, গত ৬ মাস ধরে ১০০ দিনের কাজের টাকা আটকে রয়েছে বলে জেলা সফরে গিয়ে একাধিকবার অভিযোগ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এরকম পরিস্থিতিতেও রাজ্য সরকার চাইছে ১০০ দিনের কাজ বেশি হোক। তবে লক্ষ্যনীয় বিষয় এটাই, সামগ্রিকভাবে পঞ্চায়েত এলাকার কাজই আগে শেষ করতে চাইছে সরকার। ফলে বিরোধীদের ধারনা পঞ্চায়েত ভোট এগিয়ে আনার দিকেই এগোচ্ছে রাজ্য সরকার।
সরকারের এমন নির্দেশিকা নিয়ে সুজন চক্রবর্তী বলেন, এই সরকারের আমলে স্থানীয় ভোট কখনও সময়মতো হয়নি, পিছিয়েছে। হাওড়ার বালি পুরসভার নির্বাচন এখনও হয়নি। এই সরকার গণতান্ত্রিক পন্থাপদ্ধতি মেনে চলে এমন কথা সরকার পক্ষেরও কেউ বলতে পারবে না। এবার শোনা যাচ্ছে পঞ্চায়েত ভোট এগিয়ে আসতে পারে। দ্রুত কাজ শেষ করলে ভালোই হবে। কিন্তু একশো দিনের কাজের টাকা সাধারণ মানুষ কি পেয়েছে? সময়মতো নির্বাচন হোক। তবে সরকার যদি ভোট এগিয়ে আনতে চায় তো আনুক। আমরা নির্বাচনে যাব।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন