মঙ্গলবার সন্দেশখালি যাওয়ার আগে ধামাখালিতে বিজেপি বিধায়কদের আটকায় পুলিশ। সেখানে বিজেপি বিধায়কদের সঙ্গে পুলিশের বচসার মধ্যে পাগড়ি পরিহিত এক আইপিএস অফিসারকে ‘খালিস্তানি’ বলে সম্বোধন করেন বিজেপি নেত্রী ও বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল।
এই ঘটনার বিরুদ্ধে সবর হয়েছেন সর্বস্তরের মানুষ। প্রতিবাদ জানিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীও। পাশাপাশি, পুলিশের তরফ থেকে সাংবাদিক বৈঠক করে এই ঘটনায় আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানানো হয়েছে। রাজনৈতিক মহলের মতে এদিনের ঘটনার পরে বেশ কিছুটা ব্যাকফুটে বিজেপি। যে কারণে তড়িঘড়ি ড্যামেজ কন্ট্রোলে নামতে হয়েছে একাধিক বিজেপি নেতৃত্বকে।
ঘটনার সূত্রপাত রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর সন্দেশখালি যাওয়ার পথে। বিরোধী দলনেতা যাওয়ার আগে সন্দেশখালির ১২ টি জায়গায় ১৪৪ ধারা জারি করে পুলিশ। পরে অবশ্য আদালতের নির্দেশে সন্দেশখালি যান শুভেন্দু অধিকারী। বিজেপি বিধায়কেরা ধামাখালি পৌঁছালে পুলিশের সঙ্গে বচসা বাধে। জানা গেছে, বচসার সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন আইপিএস অফিসার যশপ্রীত সিং। পদমর্যাদায় তিনি এস এস - আই বি। অভিযোগ, তাঁকে উদ্দেশ্য করেই ‘খালিস্তানি’ বলে মন্তব্য করেছেন অগ্নিমিত্রা পাল।
এই ঘটনার এক ভিডিও ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। যেখানে ওই পুলিশ অফিসারকে বলতে শোনা যাচ্ছে, “আমি পাগড়ি পরেছি বলে আমি খলিস্তানি। আপনি আমার ধর্ম নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন? আমি এর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেব।’’ এর জবাবে অগ্নিমিত্রাকে একবারও বলতে শোনা যায়নি যে, তিনি এ কথা বলেননি। বরং তিনি সমানে বলে যান, ‘‘আপনি এক জন পুলিশ অফিসার, আপনি আপনার দায়িত্ব পালন করুন।’’ পরে অবশ্য অগ্নিমিত্রা জানান, তিনি ওই মন্তব্য করেননি। যদিও ভাইরাল ওই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি পিপলস রিপোর্টার।
এই ঘটনার ভিডিও নিজের এক্স হ্যান্ডেলে (পূর্বতন ট্যুইটার) পোষ্ট করে বিজেপির বিরুদ্ধে সমালোচনায় মুখর হয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা পুলিশ মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি লেখেন, ‘‘বিজেপি তা হলে মনে করে, যারা পাগড়ি পরেন তাঁরাই খালিস্তানি! ওদের বিভাজনের রাজনীতি এ বার সাংবিধানিক সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে।’’
এই ঘটনার পর বিকেলে রাজ্য পুলিশের তরফে এক সাংবাদিক বৈঠক করেন এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতিম সরকার। তিনি আইপিএস অফিসারের উদ্দেশ্যে ‘খলিস্তানি’ মন্তব্যের নিন্দা করেন। পাশাপাশি, এই ঘটনার যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও জানান তিনি। ওই সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেন, ‘‘ওই মন্তব্য অসংবেদনশীল, প্ররোচনামূলক এবং ধর্মীয় বিশ্বাসে আঘাত করেছে। এর তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা করছি।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘একজন পাগড়ি পরেন বলেই তিনি খালিস্তানি? পুলিশের মধ্যে হিন্দু, মুসলমান, শিখ, খ্রিস্টান সবাই আছেন। সবাই তাঁদের দায়িত্ব পালন করেন। এই ধরনের মন্তব্য ধর্মীয় বিভেদ তৈরি করে। আমরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করব।’’
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন